কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরের এক কৃষকের খামারে চাষ হচ্ছে চায়না থেকে আমদানী করা নতুন জাতের হলদে রঙের তরমুজ। রাজধানী ঢাকার অভিজাত হোটেলগুলোতে এ জাতীয় তরমুজের রয়েছে প্রচুর চাহিদা। ভারত ও চায়না থেকে হলুদ তরমুজ আমদানীর উপর নির্ভরশীল এসব হোটেল। এখন চাহিদার কিছুটা হলেও যোগান দিচ্ছে হবিগঞ্জের মাধবপুরের কৃষক বদু মিয়ার কৃষি খামারে উৎপাদিত এসব তরমুজ।
সারা বছরই চায়না জাতের তিন প্রকার তরমুজ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করেন বদু মিয়া। এলাকার চাষিদের কাছে স্বর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে হলুদ জাতীয় তরমুজ। বদু মিয়ার দেখাদেখি অনেকেই এখন এ জাতীয় তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। অল্প সময়ে ফলন ও মূল্য ভাল পাওয়ায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা বদু মিয়ার কৃষি খামার দেখতে আসছেন।
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনীতে কৃষি বিপ্লব ঘটানো বদু মিয়া প্রতি বছরই নতুন কিছু চাষাবাদ করে এলাকায় তাক লাগিয়েছেন। হাইব্রিড জাতীয় মাল্টা আলু চাষ করে কয়েকবছর আগে কৃষকদের মাঝে আলোচনায় আসেন বদু। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক বদু মিয়া এখন মডেল। আমজাদ খানকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় ৩ বছর আগে পরীক্ষামূলক ভাবে চায়না থেকে আমদানী করা হলুদ তরমুজের বীজ কিছু জায়গায় বপন করে ভাল ফল পায় বদু মিয়া। এরপরই তার চিন্তায় আসে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হলুদ তরমুজ চাষ করার।
এ বছর বদু মিয়া ৩ বিঘা জমিতে বিদেশ থেকে আমদানী করা বীজের উন্নতমানের তরমুজ চাষাবাদ করেছে। তানীয়া মনিয়া, ব্ল্যাকবেরী, সামমাম এই তিন জাতের তরমুজে বদু মিয়ার ক্ষেত এখন ভরে গেছে। জমি চাষাবাদ করতে বীজ সার পরিচর্যাসহ প্রতি বিঘায় তার খরচ পড়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তার ক্ষেতে ফলানো তরমুজ রাজধানীর অভিজাত হোটেল গুলোতে ভোক্তদের মেনুতে স্থান পেয়েছে। আগে এ তরমুজ ভারত ও চায়না থেকে আমদানী করা হতো।
প্রতি কেজি তরমুজ মৌসুম ভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। বদুমিয়ার তরমুজের সফলতা দেখে মাধবপুরের অনেক কৃষক লাভজনক বারমাসী তরমুজ চাষ করতে এগিয়ে এসেছেন। চৌমুহনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আপন মিয়া জানান, গোপীনাথপুর, কমলপুর, রাজেন্দ্রপুর, চৈতন্যপুর, গাজীপুরসহ ওই এলাকার মানুষের আগে তেমন কাজ ছিল না। অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকত। এখন বদু মিয়ার কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা তাদের পতিত জমিতে বিভিন্ন জাতের ফসল চাষাবাদ করছেন।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিকুল হক জানান, কৃষক বদু মিয়ার নতুন জাতের হলুদ তরমুজ উৎপাদনে কৃষিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। অন্যান্য কৃষকরাও এসব ফসল উৎপাদনে করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে বদু মিয়াকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সুত্রঃ যুগান্তর / কৃপ্র/এম ইসলাম