‘নদীভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে নিঝুম দ্বীপের জাতীয় উদ্যানের উত্তরাংশের বনাঞ্চল’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নোয়াখালী জেলার সাগর মোহনায় নিঝুম দ্বীপ। অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়েছে বন বিভাগের একটি উদ্যান।এখানে রয়েছে অসংখ্য চিত্রাহরিণ। দেশের অন্য কোনো বনে এত বেশি চিত্রাহরিণ দেখা যায় না। জানা যায়, ওসমান নামে এক ব্যক্তি তার মহিষের বাথান নিয়ে এ দ্বীপে বসতি গড়ার পর এটি পরিচিতি পায় চর ওসমান নামে। চারটি দ্বীপ ও ছোট ছোট কয়েকটি চর নিয়েই তৈরি হয়েছে নিঝুম দ্বীপ । উত্তর-দক্ষিণে এ দ্বীপ প্রায় ৯ কিলোমিটার লম্বা আর পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় সাত কিলোমিটার চওড়া।
২০০১ সালে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা পায়। ১৯৭৪ সালে এ বনে সর্বপ্রথম সুন্দরবন থেকে এনে চার জোড়া চিত্রাহরিণ ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই চারটি হরিণের বংশবিস্তারের ফলে এ বনে হরিণের সংখ্যা এখন ২০ হাজারেরও বেশি। নিঝুম দ্বীপের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ চিত্রাহরিণ। নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের প্রধান প্রাণী চিত্রাহরিণ। এ ছাড়া এই বনে আছে উদবিড়াল, মেছো বাঘ, খেকশিয়াল ইত্যাদি।
উদ্যানটি দেখতে সুন্দরবনের মতো হলেও তেমন কোনো হিংস্র প্রাণী নেই এ বনে। তাই নিঝুম দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা খুব কাছাকাছি থেকেই চিত্রাহরিণের দল দেখতে পান। এ দ্বীপের জাতীয় উদ্যানের পশ্চিম পাশে বিশাল বিশাল খোলা মাঠে পড়ন্ত বিকালে হরিণের দল ঘোরাঘুরি করে। এ দ্বীপের মনোরম দৃশ্য দেখতে হলে যেতে হবে নামাবাজারের পশ্চিম পাশে। এখান থেকে সাগরের অনিন্দ্য সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
সম্প্রতি নদীভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে নিঝুম দ্বীপের জাতীয় উদ্যানের উত্তরাংশের বনাঞ্চল। গত তিন বছরে এ বনের বড় একটা অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নিঝুম দ্বীপের পশ্চিম-দক্ষিণ প্রান্তে চৌধুরীর খাল এলাকা। নৌকায় চড়ে নামাবাজারের পাশের খাল ধরে যেতে হবে জায়গাটিতে। খালটি একেবারে বনের গহিনে চলে গেছে। নৌকায় কিংবা বনের পাশে কোথাও নিজেকে আড়াল করে চুপচাপ বসে থাকলে অনেক হরিণ দেখা সম্ভব। এ ছাড়া নিঝুম দ্বীপের পূর্ব পাশে জেগে ওঠা দমার চরের আকাশে দেখা মেলে নানা প্রজাতির পাখির মেলা। জলচর নানা পাখির নিরাপদ আবাসস্থল এই চর।
কৃপ্র/ এম ইসলাম