কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পার্বত্যাঞ্চলের মাটি মসলাজাতীয় গাছ চই উৎপাদ জন্য অনুকূল।একসময় এটি বন্য লতা হিসেবে পরিচিতি ছিল। এখন খাবারের স্বাদ বাড়াতে বেড়েছে এর চাহিদা ও কদর। পাহাড়ের স্থানীয় জুমচাষীরা জঙ্গল থেকে চই সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করছেন। বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হলে লাভবান হবেন চাষীরা। স্থানীয় চাষীদের তথ্যানুযায়ী, চইগাছ মসলাজাতীয় অপ্রচলিত উদ্ভিদ। এর মূল কাণ্ড ধূসর ও পাতাগুলো দেখতে পানপাতার মতো। চইগাছের কাণ্ডটিই বিভিন্ন এলাকায় মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়।
চইগাছ নিচু জমি অথবা গাছের গুঁড়িতে চাষ করা হয়। এর ফলন ভালো হয় দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটিতে। তবে পাহাড়ের মাটিও চই চাষের জন্য উপযোগী। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ও আশ্বিন-কার্তিকে হরমোন কাটিং পদ্ধতিতে কাণ্ড সরাসরি মাটিতে রোপণ করা হয়। চই চাষের জন্য আলাদা কোনো মাচা তৈরি করতে হয় না। আম, কাঁঠাল, জাম, সুপারি, নারকেল ও জিয়লের মতো বড় গাছের গোড়ায় রোপণ করলে তা এক বছরের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয়।
ঔষধিগুণসম্পন্ন মুখরোচক এ চই শ্লেষ্মানাশক, গায়ে ব্যথা উপশমে অত্যন্ত কার্যকর। এটি হজমি হিসেবেও কাজ করে। সাধারণত মাংসের পদ রান্নায় ব্যবহার হয় এটি। পাহাড়ের আদিবাসী চাষীরা জুম প্রাকৃতিকভাবে উত্পাদিত এসব চইগাছ সংগ্রহ করে থাকেন। পরে তা আটি বেঁধে নিয়ে আসেন স্থানীয় বাজারে।
চইগাছ বাজারে বিক্রি করেন দীঘিনালা উপজেলার যতিন ত্রিপুরা। তিনি জানান, প্রতি বছর ঢালু পাহাড়ে জুমের জমি তৈরির সময় চই পাওয়া যায়। এসব চই প্রাকৃতিকভাবে উত্পাদিত। স্থানীয় পাইকার ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, স্থানীয় বিভিন্ন বাজার থেকে আমরা ৪০ টাকা কেজি দরে চই কিনে থাকি। পরে তা শহরের অভিজাত হোটেলগুলোয় ২০০-৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। পাহাড়ি চইয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সমতল ভূমিতে।
দীঘিনালা কৃষি হর্টিকালচার সেন্টারের উপসহকারী উদ্যানতত্ত্ব কর্মকর্তা সেলিম জাবেদ জানান, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া চই চাষের খুবই উপযোগী। প্রাকৃতিকভাবে উত্পাদিত চই সংগ্রহ করে সারা দেশেও সরবরাহ করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তামাকের বিকল্প হিসেবে চইগাছ এখানে বাণিজ্যিকভাবে আবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।
সুত্রঃ বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম