কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ খুলনাবাসীর খাবারের মেন্যুতে কোনো না কোনো ভাবে চুইঝাল থাকা চাই। আমাদের দেশে ঝাল স্বাদের মশলাজাতীয় এ খাবারটির উৎপত্তি বাগেরহাটে বলে মনে করা হয়। তবে খুলনা অঞ্চলে এটি জনপ্রিয়তা লাভ করে বেশি।এখন এর গুণ ও সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। তবে সব চুই কিন্তু এক নয়। এরও জাত আছে। সে অনুযায়ী নির্ভর করে এর দাম, স্বাদ, গন্ধ।
ভারত থেকেও কিছু চুই আসে। কিন্তু কোনটা আসল খুলনা-বাগেরহাট অঞ্চলের চুই তা বোঝার কয়েকটি উপায় বাতলে দিলেন ফুলতলা বাজারের তরুণ চুই বিক্রেতা সৈয়দ সোহাগ।কীভাবে রান্না করা হয়, কোনগুলোর স্বাদ বেশি- এসব প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, বাজারে আপনি যে চুই দেখবেন তা কিন্তু সব এ অঞ্চলের নয়। এদিকে সেভাবে বাণিজ্যিক চাষ হয় না। যার যার বাড়িতে যা কিছু লাগায় তা অনেকদিন হলে বিক্রি করে দেয়। এমন ঘটে বেশি। দেশের মধ্যে বেশি চাষ হয় রংপুর আর সিলেট, চট্টগ্রামের পাহাড়ে। তবে স্বাদ বেশি খুলনা-বাগেরহাটের চুইঝালের।
অঞ্চল ভেদে চুইয়ের নানান জাত। যে চুইয়ের শরীরে বেশি শিকড় থাকবে সেটি খুলনা-বাগেরহাট অঞ্চলের এর শিকড়গুলো হবে একটু চিকন, এটি রান্নার সময়ে খুব কম সময়ে আর সহজে গলে যাবে। স্বাদ ও ঝাঁঝ হবে লোভনীয়। গোড়ার যে অংশটুকু মাটির নিচে থাকে এর স্বাদ আবার বেশি। নরমও হয় দ্রুত। সরু, মাঝারি ও মোটা- সবগুলোতেই শিকড় বেশি থাকবে। এক গিরা থেকে আরেক গিরার ফাঁকও হবে ছোট। দাম মোটামুটি ভালো মানের। এক গিরা থেকে আরেক গিরার মাঝের ফাঁক বেশি রংপুর অঞ্চলের চুই, রংপুরের চুইয়ে বাজার ভরা। রংপুর থেকে যে চুই আসে তাতে শিকড় থাকে কম। আবার শিকড়গুলো একটু মোটা হয় বেশি। তুলনামূলক শক্ত ও স্বাদ, গন্ধ কম হয়।
আরেক ধরনের চুই পাহাড়ে জন্মে। পাহাড়ি চুইয়ের শিকড় থাকে না বললেই চলে। লম্বা ও অনেক মোটা হলেও তুলনামূলক শক্ত। সিদ্ধ হতে দেরি হয়। নরম না হলে খেতে মজাও লাগে না। খুলনার প্রায় সব বাজার, ফুটপাতে চুই বিক্রি পাওয়া যায়। বাইরে থেকে পর্যটকরা এসেও খোঁজেন বিখ্যাত চুই। তবে সবাই মাংসের সঙ্গে চুই দিয়ে রান্না করা হয় বলেই জানেন। কিন্তু এ ধারণা ভুল। তরকারি, সবজির সঙ্গেও খাওয়া হয়। আর এর রয়েছে দারুণ কার্যকরী সব ওষুধি গুণ।
কৃপ্র/ এম ইসলাম