কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ যমুনা নদীর ক্রমাগত ভাঙনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাহুকা গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের বসতভিটা ও ফসলি জম। গত দুই সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকায় ওইসব এলাকার মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়েছে। এরই মধ্যে ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ বাসিন্দা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতি বছরই ওইসব এলাকা নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে। তীব্র ভাঙনের কারণে গত দুই মাসে বাহুকা থেকে শুভগাছা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে ভাঙনে তিন শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও প্রায় ৫০ একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। ফলে সচ্ছল ও স্বাবলম্বী পরিবারগুলো ভাঙনকবলিত এলাকা ছেড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে সরে যেতে পারলেও দরিদ্র পরিবারগুলো কোনো উপায় না পেয়ে ওয়াপদা বাঁধে ঝুপড়ি বেঁধে বসবাস করছেন এবং খেয়ে না খেয়ে দিনের পর দিন অতিবাহিত করছেন।
বাহুকা গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার সাত বিঘা জমিতে বোরো ধানের প্রজেক্ট ছিল। এতে পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। কিন্তু গত এক মাস আগে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনের কারণে বাড়িঘর-ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। তাই এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি আমি। একই এলাকার বাসিন্দা শাওন বলেন, নদীভাঙনের কারণে বাড়িঘর ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব আমাদের এলাকার অনেক মানুষ। ১০ থেকে ১৫ বার ভাঙনের কবলে পড়ে এখন পথে বসেছি আমরাও। তাই উপায় না দেখে পরিবার নিয়ে ওয়াবদা বাঁধে বসবাস করছি।
চর বাহুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, নদীভাঙন অব্যাহত থাকায় এ অঞ্চলের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিও এখন হুমকির মুখে। ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র ৪০ গজ দূরে অবস্থান করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। গত দুই সপ্তাহ ধরে যেভাবে নদীর পাড় ভাঙছে তাতে এ প্রতিষ্ঠানটিও বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, যমুনার ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নেয়ায় বাহুকা গ্রামসহ ওই এলাকার বিরাট একটা অংশ মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই জরুরিভিত্তিতে নদীভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সহকারী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় ওই সব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সুত্রঃ বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম