কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার অধিকাংশ এলাকার মাঠে ঘাটে হাটে সর্বত্র এখন হাঁসের পাল। হাঁসের প্যাক প্যাক শব্দে মুখর গৃহস্থবাড়ির আঙিনা আর খামার। বেড়েই চলেছে এদের প্রতিপালন। নদী-নালা, বিল, উম্মুক্ত জলাশয় এবং মাছের খামারে হাঁস লালন পালন করে সংসারের বাড়তি আয় করছেন অনেকেই।
প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় ছোট নদী, পুকুর ও খাল-বিল ছোট-বড় মিলে প্রায় ১১৫টি হাঁসের খামার রয়েছে। এসব একেকটি খামারে ৪০০ থেকে দুই হাজার পর্যন্ত হাঁস রয়েছে। সব মিলে এক লাখের বেশি হাঁস রয়েছে খামারগুলোতে। খামার থেকে প্রতিদিন গড়ে ডিম পাওয়া যায় ২ হাজার থেকে ৩ হাজার।
সম্প্রতি উপজেলা তানোর ও মুণ্ডুমালা পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলায় অসংখ্য খাল-বিল ও নদী-নালা অবস্থিত। এসব নদী-নালা খরার মৌসুমে শুকিয়ে গেলেও বর্ষা মৌসুমে যৌবন ফিরে পায়। এসব জায়গায় হাঁসের খামারিরা গড়ে তুলেছেন তাদের স্বপ্নের হাঁসের খামার। হাঁসগুলো সারা দিন নদী, পুকুর বা খালে-বিলেই চরে বেড়ায়। রাতে নেয়া হয় নদী ও বিলের পাড়ের অস্থায়ী খামারে। দিনভর নদী ও খালে ঘুরে ঘুরে প্রাকৃতিক খাবার খায়। বাড়তি খাবার দেয়ার তেমন প্রয়োজন পড়ে না। আর এভাবে এ অঞ্চলে প্রায় কয়েকশ হাঁসের খামার গড়ে উঠেছে।
উপজেলার ২০ থেকে ৩৫ জন খামারি জানান, প্রথমে পাঁচ-ছয়টি হাঁস লালন পালনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। লাভজনক হওয়ায় পরে তা বাড়তে বাড়তে শ শ হয়েছে। হাঁস পালনে খরচ কম। ডিম দেওয়া পর্যন্ত একটি হাঁস পালনে খরচ হয় ৮০ থেকে ১শ টাকা। চার/পাঁচ মাস বয়স হলে একটি হাঁস ২৫০ থেকে ২৮০টি ডিম দেয়। আবার মাছের খামারে হাঁস পালন করে প্রচুর টাকা আয় করছেন অনেকেই। এছাড়া নদীও বিল কেন্দ্রিক খামারিদের হাঁস পালনে তেমন একটা খরচ নেই বললেই চলে। অল্প পুঁজি খাটিয়েই এই ব্যবসা করা যায়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোখলেসুর রহমান জানান, ওষুধের সরবরাহ কম থাকায় অনেক সময় খামারিদের চাহিদামতো ওষুধ দেওয়া যায় না। আর জনবল কম থাকায় অনেক সময় খামারগুলোতে সঠিক সময়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তবুও অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় উপজেলা জুড়ে হাঁস পালন ও খামারের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম