কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ যশোর জেলার মনিরামপুরে কেঁচো সার উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটছে। উৎপাদনের সহজ কৌশল, গুণগত মানসম্পন্ন, সাশ্রয়ী হওয়ায় চাষীরা দিন দিন এ সার উৎপাদনে ঝুঁকছে। গত কয়েক বছরে উপজেলার ৪১ চাষী এ সার তৈরিতে সফলতা দেখিয়েছে। তাদের দেখে অন্য চাষীরাও এ সার উৎপাদনে এগিয়ে আসছে। তবে এ সার তৈরিতে পুরুষের চেয়ে নারীরা অগ্রগামী ভূমিকা রাখছে।
কৃষি অফিস সূত্রমতে, মনিরামপুরে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) উৎপাদনকারী সফল চাষীর সংখ্যা ৪১। ওই চাষীরা তাদের উৎপাদিত সার নিজেদের জমিতে ব্যবহার করছে। পাশাপাশি তারা কেঁচো সার বিক্রি করে মাসে ২-৩ হাজার টাকা বাড়তি আয় করছে। এদের দেখাদেখি আরও প্রায় ১৫০ চাষী এ সার উৎপাদনে উদ্যোগী হয়েছে। তাছাড়া উপজেলাজুড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কৃষক কেঁচো সার ব্যবহার করছে।
কেঁচো সার উৎপাদনে স্বাবলম্বী চাষী দোদাড়িয়া গ্রামের জামিরুল। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে যশোর থেকে মাত্র ৫০০ টাকায় ২৫০টি কেঁচো কিনে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেন তিনি। বর্তমানে জামিরুলের কেঁচোর সংখ্যা আট হাজার। নিজের এক একর জমিতে তিনি এ সার ব্যবহার করেন। প্রথাগত সার ব্যবহার করে অন্য চাষীরা যে সবজি ফলান, কেঁচো সার ব্যবহারে জামিরুলের উৎপাদিত সবজি তার থেকে গুণে-মানে অনেক ভাল। জামিরুল তার উৎপাদিত কেঁচো সার শুধু নিজের জমিতেই ব্যবহার করেন না, উৎপাদিত অবশিষ্ট অংশ বিক্রি করে মাসে আয় করেন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।
জামিরুলের এ সফলতা দেখে ওই এলাকার চাষী রেজাউল, আরশাদ, আকছেদ, আব্দুল হামিদ, আকবর হোসেন, আব্দুস সাত্তার, আতিয়ার ও আনসারসহ ১১-১২ জন বাণিজ্যিকভাবে এ সার উৎপাদনে ঝুঁকে পড়েছে। এরা সবাই জামিরুলের কাছ থেকে কেঁচো নিয়ে এ কাজে নেমেছে। সম্প্রতি দোদাড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বাইরে চালার নিচে কেঁচো সার উৎপাদনের তিনটি প্ল্যান্ট দেখভাল করছেন জামিরুলের স্ত্রী হাসিনা খাতুন। জামিরুলের দেখাদেখি ওই গ্রামের ১১-১২ জনকে এ সার তৈরি করতে দেখা গেছে। কথা হয় জামিরুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন আমার প্ল্যান্ট সংখ্যা তিন। নিজে এক একর জমিতে ব্যবহার করে ১৩ টাকা কেজি দরে মাসে দুই হাজার টাকার মতো সার বিক্রি করা যায়।
কৃপ্র/এম ইসলাম