কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সুন্দরবনে এখন চলছে গোলপাতা সংগ্রহের ভরা মৌসুম। বন সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার পেশাজীবীরা পাস (অনুমতি) নিয়ে গোলপাতা সংগ্রহের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছেন। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে স্থানীয় প্রভাবশালী পেশাজীবীরা গোলপাতা সংগ্রহের নামে হরিলুট শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা বন বিভাগের নির্ধারিত মাপের চেয়ে নৌকাগুলোতে অবৈধ মলম (মূল নৌকার চেয়ে বাড়তি অংশ) সংযুক্ত করে গোলপাতা সাবাড় করে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট বনরক্ষীরা উৎকোচের বিনিময় নৌকার প্রকৃত ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কম দেখিয়ে বিএলসি প্রদান করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ থেকে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি, শরণখোলা ও বগী স্টেশন বাওয়ালীদের গোলপাতা সংগ্রহের জন্য প্রথম দফা অনুমতি প্রদান শুরু করে। যা চলবে আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত।
চলতি মৌসুমে গোলপাতা আহরণ নিয়ে এক বনরক্ষীর সঙ্গে আলাপ হলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গোলপাতা সংগ্রহের পাশ নিয়ে কোন বাওয়ালীই নিয়ম অনুযায়ী পাতা সংগ্রহ করছেন না। অল্প সময়ের মধ্যে বেশি পাতা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তারা গোল গাছের একটি মাত্র মাইজ পাতা রেখে বাকিগুলো দেদারছে সাবাড় করে ফেলায় গোল গাছের প্রজন্ম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতি বছর গোল পাতার পাস-পারমিট প্রদান করে সরকার যে পরিমান রাজস্ব পায় তার চেয়ে বহু গুণ ক্ষতি হয় সুন্দরবনের। তার মতে, বনের সব ধরনের পাস-পারমিট বন্ধ করে দিয়ে সুন্দরবনকে ওয়ার্ল্ডহ্যারিট্যাস হিসাবে ঘোষণা করা উচিত। তাহলে সুন্দরবন তার নিজের রূপে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
পূর্ব সুন্দরবনের বাদামতলা এলাকায় গোলপাতা সংগ্রহকারী এক শ্রমিক বলেন, বার বার জঙ্গলে ঢুকতে যাতে না হয় সে জন্য বেশি লাভের আশায় নৌকা গুলোতে মলম দিয়ে অতিরিক্ত গোলপাতা বোঝাই করে নিচ্ছে সবাই। আর এগুলো বন বিভাগ দেখবে না বলেই বনরক্ষীদের ম্যানেজ করে নিয়েছেন নৌকার মালিকরা। পাশাপাশি স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে অনেকটা অসহায় বন বিভাগ। তবে, নানা অনিয়ম ও মলম প্রথার বিষয় অস্বীকার করে পূর্ব সুন্দরবনের সহকারি বন সংরক্ষক মোহাম্মদ হোসেন জানান, গোলপাতা সংগ্রহে শেষে নৌকাগুলো লোকালয়ে আসলে তা সঠিকভাবে তদারকি করা হবে। কোন নৌকায় অনিয়ম ধরা পড়লে বিএলসি বাতিলসহ মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সুত্রঃ দৈনিক সাংবাদ/ কৃপ্র/এম ইসলাম