কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পরিবেশদূষণসহ নানা কারণে নগরজীবনের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলছে মানুষ। আশ্চর্যের বিষয় হলো, মানুষের মতো মৌমাছির ভেতরেও দেখা যাচ্ছে একই প্রবণতা। তবে মৌমাছির এ গ্রামপ্রীতির প্রকাশ পাচ্ছে তার ফুল পছন্দ-অপছন্দের মধ্য দিয়ে। সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মৌমাছিদের কাছে শহরের চেয়ে গ্রামের ফুলই বেশি পছন্দের। খবর সায়েন্স ডেইলি। গবেষণাটি থেকে শহুরে মৌচাষীরা উপকৃত হতে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞরা।
মধ্যাঞ্চলের এক কবরস্থানে গড়ে ওঠা কয়েকটি মৌচাকের মৌমাছিদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে গবেষণাটি দাঁড় করিয়েছেন তারা। শহর ও কৃষিনির্ভর গ্রামাঞ্চলের মাঝামাঝি স্থানে গড়ে উঠেছে কবরস্থানটি। ফলে মধু ও পরাগরেণুর খোঁজে শহর ও গ্রাম দুদিকেই যাওয়ার সুযোগ ছিল এখানকার মৌমাছিদের। গ্রীষ্মের শেষ পর্যায় থেকে আরম্ভ করে শরতের শুরু পর্যন্ত এ পর্যবেক্ষণ চালান গবেষকরা। সম্প্রতি এর ফল প্রকাশ হয়েছে ‘জার্নাল অব আরবান ইকোলজি’ শীর্ষক জার্নালে। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির পতঙ্গবিদ্যার শিক্ষার্থী ডগলাস স্পনস্লার। গবেষণা নিবন্ধের মূল লেখকও তিনি।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, মধু ও ফুলের রেণু আহরণের জন্য কবরস্থানের মৌমাছিগুলো প্রায় সময়ই উড়ে যেত গ্রামের দিকে। শহরের দিকে গেলেও তা ছিল খুবই কম। অথচ শহরের দিকটায় ফুলের প্রাচুর্য ও বৈচিত্র্য যে কম ছিল, তাও কিন্তু নয়। গবেষণার পুরো সময় ধরে পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হন, গ্রামের কৃষিভিত্তিক এলাকাগুলোর ফুলই মৌমাছিদের বেশি পছন্দের। এমনকি একপর্যায়ে এক গ্রামের নির্দিষ্ট একটি পয়েন্ট থেকে মৌমাছিগুলোকে প্রায় ৯৬ শতাংশ রেণু আহরণ করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
ডগলাস স্পনস্লার বর্তমানে পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত রয়েছেন। গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মধু আহরণকারী মৌমাছিগুলোকে দেখে মনে হয়েছে, ফুলের প্রাচুর্য বা বৈচিত্র্য কোথায় বেশি তা নিয়ে এদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তাদের প্রবণতাই ছিল, মধু আহরণ করতে হবে নিজের পছন্দের জায়গা থেকে।’
কৃপ্র/এম ইসলাম