কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পিঁপড়া নামক পতঙ্গটির নানা উৎপাতের শিকার হতে হয় মোটামুটি সবাইকেই। পরিশ্রমী এ পতঙ্গটি একই সঙ্গে উপকারীও বটে। এক গবেষণার সূত্র ধরে চীনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বায়ু ও জলপ্রবাহ এবং জৈব পদার্থ বাড়ানোর মাধ্যমে মাটির উপকারিতা বাড়ায় পিঁপড়া। একই সঙ্গে মাটিতে বাসা বাঁধার সময় পতঙ্গটি আশপাশে যে স্তূপ বা ঢিবি বানায়, মাটির পানি ধরে রাখার ক্ষেত্রেও তা সহায়ক ভূমিকা রাখে।
পিঁপড়া হলো ব্যস্ত পতঙ্গ, যার বসবাস মাটিতে। ওপর থেকে দেখলে পিঁপড়ার বাসাকে ছোট ছোট ছিদ্র ছাড়া আর কিছুই মনে হবে না। কিন্তু এর ভেতর নানা চ্যানেল ও চেম্বারের সমাহার। এ বাসা বানানোর জন্য পতঙ্গটিকে যে মাটি খনন করতে হয়, তা আসলে কোথায় যায়? পিঁপড়ার বাসার বাইরে মাটির দলা বাঁধা যে স্তূপ বা ঢিবি দেখা যায়, প্রকৃতপক্ষে তা হলো সেই খনন করা মাটিরই স্তূপ, যাকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন ‘অ্যাগ্রিগেট মাল্চ’। এ অ্যাগ্রিগেট মালেচর মাধ্যমেই মাটির উর্বরা শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় পানি ধরে রাখার মাধ্যমে কৃষকের সহযোগীর ভূমিকা পালন করে পিঁপড়া।
গবেষকদের অন্যতম মৃত্তিকা বিজ্ঞানী তোংচুয়ান লি বলেন, শুধু অ্যাগ্রিগেট মাল্চ তৈরি নয়, বাইরে থেকে খাবার এনে এসব গর্তে সংরক্ষণের মাধ্যমে মাটির পরিবেশ সুরক্ষায়ও অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে তারা। এসব খাবারের মধ্যে মৃত পতঙ্গর শরীর, পাতা, চিনির পানি এমনকি ফুলের মধুও রয়েছে। পিঁপড়ার বাসায় চলাচলের জন্য তৈরি চ্যানেলগুলোর একেকটির সর্বোচ্চ ব্যাস ৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার। এসব চ্যানেল ও চেম্বার বায়ু চলাচলের উপযোগী, যা গর্তে পিঁপড়ার আসা-যাওয়ার ওপর নির্ভর করে বাড়ে বা কমে।
তোংচুয়ান লি ও চীনের ইয়াংলিংভিত্তিক নর্থওয়েস্ট এঅ্যান্ডএফ ইউনিভার্সিটির সহকর্মীদের গবেষণায় উঠে আসে, কৃষিজমিতে পানি ধরে রাখায় অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখে অ্যাগ্রিগেট মাল্চ। এছাড়া নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতেও সহায়তা করে এসব মাল্চ।
সুত্রঃ সায়েন্স ডেইলি/ কৃপ্র/এম ইসলাম