কৃষি প্রতিক্ষণ রিপোর্টঃ দেশে দিন দিন ফুলের চাহিদা বাড়ছে। উৎসবগুলো এখন আরও জমজমাটভাবে উদযাপিত হচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শোভা পাচ্ছে ফুল। বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, পারিবারিক অনুষ্ঠান হচ্ছে না ফুল ছাড়া। এমনকি ঘরেও মানুষ এখন তাজা ফুল রাখছে ফুলদানিতে। দেশের যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, ময়মনসিংহ, সাভার, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, গাজীপুর, মেহেরপুর, রাঙামাটি, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস ও জারবেরা ফুল চাষ হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশে ১৮৯ একর জমিতে গোলাপের চাষ হয়েছিল। গত বছর তা বেড়ে ২৮১ একরে উঠেছে। গাঁদা ফুল চাষ ৯২৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪৬৭ একর। রজনীগন্ধার আবাদ ৬৬৬ একর থেকে বেড়ে ২ হাজার ৩৩৯ একর হয়েছে। শুধু চাষ নয়, পরিবহন ও বিক্রি মিলিয়ে ফুলবাণিজ্যের সঙ্গে প্রায় ২০ লাখ মানুষ জড়িত।
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন ২০১৫ সালে দেশের ফুলের বাজার ও রপ্তানি সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, এক একর জমিতে জারবেরা চাষ করলে একজন কৃষকের বছরে ২৫ লাখ টাকা মুনাফা হয়। এ ছাড়া গোলাপ চাষে দুই লাখ, গাঁদা চাষে এক লাখ ও গ্লাডিওলাস চাষে একরপ্রতি এক লাখ টাকা মুনাফা করতে পারেন কৃষকেরা।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকার মতো ফুল চাষে দেশের কৃষকেরা অনেক আগে থেকেই সিদ্ধহস্ত। এখন তাঁদের জমিতে ফুটছে জারবেরা, গ্লাডিওলাসের মতো আমদানি-বিকল্প ফুল। এমনকি অর্কিডও আবাদ হচ্ছে দেশে। তাই এখন আর মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করতে হচ্ছে না। তিনি বলেন, দুই বছর আগে থেকে জারবেরা আমদানি একেবারেই কমে গেছে। আর গ্লাডিওলাস আমদানি বন্ধ হয়েছে প্রায় ১০ বছর হলো। ২০০৬ সাল থেকে গ্লাডিওলাসের বীজ উৎপাদন করছেন দেশের কৃষকেরা। এখন জারবেরার বীজ উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। কিছু কিছু ফার্ম এখন অর্কিডও উৎপাদন করছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে কিছু কিছু ফুল রপ্তানি হয়। তবে পরিমাণে নগণ্য। ব্যবসায়ীরা বলেন, সবজির সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে কিছু ফুল রপ্তানি হয় হয়। তবে সম্প্রতি মালয়েশিয়া ও জাপানে বাণিজ্যিকভাবে ফুল রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম