কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে ইলিশের উৎপাদন প্রতি বছর ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি অর্থ বছরের ইলিশ মৌসুমে বিপুল সংখ্যক ইলিশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা ও জেলেরা। পিরোজপুর জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন জানান, ডিম ছাড়ার জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে মা-ইলিশ নোনা পানি থেকে মিঠে পানির নদ-নদীতে চলে আসে। আর এসময় জেলেরা মা-ইলিশ শিকারে জাল পেতে নদ-নদী ছেয়ে ফেলে।
চলতি অর্থ বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মা-ইলিশ শিকার বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ সময় এ জেলায় প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেয়া হয় এবং শতাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিদিন নদ-নদীতে অবৈধভাবে ইলিশ শিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এ সময় আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টি, ১৪ হাজার ৮শত ৭৫ জেলে পরিবারকে বিনামূল্যে ২০ কেজি করে ৩শত মেট্রিক টন চাল প্রদান, অবৈধ জাল জব্দ করে বৈধ জাল প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ণ করা হয়।
জেলা মৎস্য অফিসের একটি সূত্র জানায়, এবার অনেকটাই অবাধে ডিম ছেড়ে মা-ইলিশ সাগরে ফিরে যেতে পেরেছে। ইলিশের লক্ষ লক্ষ পোনা নদ-নদীতে বিচরণ করে পূর্ণ ইলিশে রুপান্তরিত হয়ে সাগরে ফিরে যাবে। এ সময় এই জাটকা নিধন ও কঠোর হস্তে দমন করার লক্ষ্যে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ‘জাটকা মাছ রক্ষা পেলে, খাদ্য-অর্থ দুই মেলে’ -স্লোগানকে সামনে রেখে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ সময় এ জেলায় ৯ হাজার ৯শত ৫১ জেলে পরিবারকে প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে চার মাসে ১ হাজার ৫শত ২৮ মে: টন বিনামূল্যে এ চাল প্রদান করবে সরকার। প্রকৃত জেলেদের আইডি কার্ড প্রদানের পাশিপাশি মাছ শিকারের সময় সাগর বা নদীতে মৃত্যু হলে প্রতিটি পরিবারকে নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদানেরও কার্যক্রম বর্তমান সরকার শুরু করেছে। এ সব পদক্ষেপের ফলে এ জেলায় ইলিশের উৎপাদন ইতোমধ্যেই বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলা মৎস্য অফিসের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে এ জেলোর ৪-৫টি নদনদীতে মাত্র ৩ হাজার ৪শত ৭৩ মেট্রিক টন ইলিশ ধরা পড়লেও চলতি বছরে শুধুমাত্র সেপ্টেম্বরে পাওয়া গেছে দেড় হাজার মেট্রিক টন ইলিশ। যা ২০১৫ সালে একই সময়ে ছিল ৪ শত মেট্রিক টন। এছাড়া এ জেলার অন্তত: ১০টি নদ-নদীতে এবার ইলিশের প্রাচুর্য্য লক্ষ্য করা গেছে। পাড়েরহাটের জেলে কুদ্দুস পশারী জানান, এ বছর মা-ইলিশ নিধন বন্ধে এবং জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ করে সরকারী বিভিন্নমুখী পদক্ষেপের ফলে চলতি বছর এবং আগামী বছরগুলোতে এ জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সকল নদ-নদীতে মাছ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম