কৃষি প্রতিক্ষণ রিপোর্টঃ রাজশাহী অঞ্চলে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে ফুল,ফল ও ঔষধি গাছের চারা উৎপাদন করে ফসল চাষে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। আলু, টমেটো, স্ট্রবেরি, কলা ও জারবেরা ফুলের টিস্যু কালচারের মাধ্যেমে উৎপাদন চারা রোপন করে বাম্পার ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা। এতে তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান পিবভাগের অধ্যাপক ও কৃষি গবেষক ড. মনজুর হোসেন জানান, টিস্যু কালচার হচ্ছে কোন জীব বা উদ্ভিদের অংশকে সরাসরি মানুষের কল্যাণে ব্যবহারের জৈব প্রযুক্তি বা বায়োটেকনোলজির একটি ধাপ।
সাধারণত জীব বা উদ্ভিদের কচি পাতা, কোষ, মুকূল বা অংশবিশেষকে পুষ্টির মাধ্যমে আবাদ কারাকেই উদ্ভিদের টিস্যু কালচার বলা হয। টিস্যু কালচার পদ্ধতির মধ্যে মেরিস্টেম কালচার, মাইক্রোপ্রোপাগেশন, ক্যালাস কালচারের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা হয়। টিস্যু কালচার ল্যাবে টেস্ট টিউব, কাচের বোতল বা ক্লাক্সে পুষ্টির মাধ্যমে হরমোন জুগিবে নির্ধারিত উদ্ভিদের অনুচারা তৈরি করা হয়। গবেষক ও কৃষক ওই অনুচারা রোপন করে ফসল উৎপাদন করছে।
জানা গেছে, সারাদেশে গবেষণা, বাণিজ্যিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে দেড় শতাধিক টিস্যু কালচার ল্যাব গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে শুধু রাজশাহী জেলায় রয়েছে ২০টি। যা দেশের জন্য কোনো স্থানে নেই। রাজশাহীতে এগ্রোব্যাক, আমান কোল্ড স্টোরেজ, আকাফুজি এগ্রোটেকনোলজিস, আলো-আশা বাযোটেক ল্যাব , বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ, বাযোটেক, নীগার কোল্ড স্টোরেজ, জেনেটিক সিডর, হাইটেক ২টি, সুপ্রিম সিডর, বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বিএডিসিসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের টিস্যু কালচার ল্যাব রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ ল্যাব আলুর চারা তৈরি করলেও এগ্রোব্যাক স্ট্রবেরি, স্টিভিয়া, জারবেরা ফুল, অর্কিড, লিলিয়াম, ক্যাপসিয়াম ও রেডিসর চারার বাণিজ্যিক উৎপাদন করছে।
চারঘাট উপজেলার স্ট্রবেরি চাষী জাবেদ ও বাবু জানান, স্ট্রবেরি বিদেশী ফল হলেও এখন রাজশাহীসহ বিভিন্ন স্থানে চাষ হচ্ছে। বাজারে এই ফলের প্রচুর চহিদা এবং দামও বেশি। তাছাড়া, উৎপাদন খরচও কম। তাই এ অঞ্চলের চাষীরা এখন স্ট্রবেরি চাষেই ঝুঁকেছেন। এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তারা জানালেন, রাজশাহীতে টিস্যু কালচার পদ্ধতির চারা ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি করেছ। গত কয়েক বছরে এ পদ্ধতির চারায় এই অঞ্চলের কৃষিতে নীরব বিপ্লব হয়েছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম