হাওরের সবকিছু খোয়ানো মানুষের পাশে দাঁড়াতে ঢাকার কয়েকজন সংবাদকর্মীর উদ্যোগের কথা ফেসবুকে জানতে পেরে সহপাঠী বন্ধু ও এলাকার অন্যান্য শিশুদের জানান। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এলাকার তাঁত শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নাপিতের স্কুল পড়ুয়া সন্তান মোরসালিন, সাগর শীল, রিজন, আশিক, রিফাত, রাব্বি হোসেন, সিয়াম, জুবায়েল, রিপন সহ আশপাশের স্কুলে লেখা-পড়া করা ১৫ জন বন্ধু এক হয়ে চলে বৈঠক। সেখানে নিজেদের মধ্যে থেকে নিজেদের টিফিনের এবং নিজেদের অভিভাবকদের কাছ থেকে চেয়ে এনে ১০, ২০, ৪০, ৫০ টাকা করে তুলে হয় ৩৪০ টাকার তহবিল। যা ঐদিন রাতে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর কাছে হস্তান্তরের মাধ্যমে হাওরবাসীকে সহায়তার উদ্যোক্তা সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার কাছে পৌঁছে দেয় তারা। শিশুরা জানায়, আমরা সংবাদ মাধ্যমে ফসলহারা হাওরের মানুষের আর্তনাদ দেখে ব্যাথিত। যতটুকু পেরেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি।
মঞ্জুরুল আলম পান্না জানান, হাওরের অভাবী মানুষের জন্য অসহায় শিশুদের নিষ্পাপ বুকের এমন আবেগী ভালবাসা প্রকাশ আমাদের আরো উত্সাহিত করেছে। এটাই আমাদের স্বার্থকতা। এদের ভালবাসায় ঘুরে দাঁড়াবে হাওরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। এদিকে স্কুল পড়ুয়া এই অসহায় শিশুদের এমন উদ্যোগের কথা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকা তথা দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। মানবতা জয়ের নানা কমেন্টে উত্সাহী করা হয় শিশুদের এই উদ্যোগকে।
এলাকার শিশুদের এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে একুশে ফোরাম সিরাজগঞ্জের সভাপতি সমাজ কর্মী আখতারুজ্জামান তালুকদার, শাহজাদপুর সরকারী কলেজের প্রভাষক মোরশেদুর রহমান মাসুদ, চিত্র শিল্পী মোশারফ খান, ব্যবসায়ী মাসুদ খান জানান, ওরা যদি হাওরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্ট বুঝে পাশে দাঁড়াতে পারে, আর আমরা পারবোনা? ওদের কাছ থেকে মানবতা জয়ের গল্প শিখে সরকারের পাশাপাশি দেশের বিত্তবানদেরও হাওরবাসীর সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে।