কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় জুড়ী নদীর বাঁধ ভেঙে পড়ায় প্রায় ১ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুই বছর আগে বাঁধে ভাঙন দেখা দিলেও তা মেরামত না করায় এ অবস্থা হয়েছে। খবর প্রথম আলো অনলাইনের।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের জুন মাসে সাগরনাল ইউনিয়নের বরইতলি গ্রামে জুড়ী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের প্রায় ৫০ ফুট জায়গায় ভাঙন দেখা দেয়। তবে ভাঙনকবলিত স্থানটি মেরামতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসী জানান, গত রোববার ও সোমবার বেশ বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে নদীতে পানি বেড়ে যায়। আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বাঁধের ভাঙনকবলিত অংশসহ কাছাকাছি আরও দুটি স্থানের ৩০ ফুট জায়গা ভেঙে সেখান দিয়ে পানি ঢুকে বরইতলি এবং পার্শ্ববর্তী গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের মন্ত্রীগাঁও গ্রাম প্লাবিত হয়।
ভাঙনকবলিত অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। পানির তোড়ে সমাই-বরইতলি পাকা সড়কে ভাঙন দেখা দেওয়ায় স্থানীয় লোকজন মাটি ফেলে তা ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। পানিবন্দী লোকজন কলাগাছের তৈরি ভেলায় চলাচল করছেন। বরইতলি গ্রামের বাসিন্দা নূরুজ্জামান শাহী বলেন, ১৪ বিঘা জায়গাজুড়ে তাঁর মাছের খামার ছিল। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সব মাছ ভেসে চলে গেছে। মন্ত্রীগাঁও গ্রামের আলকুম আলী, মনাই মিয়া ও বরইতলির ইউছুফ আলী বলেন, তাঁদের আউশ ধানের হালিচারা তলিয়ে গেছে।
সাগরনাল ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শরফ উদ্দিন বলেন, বরইতলি ও মন্ত্রীগাঁওয়ের অন্তত এক হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। ৫০ থেকে ৬০টি খামারের মাছ ভেসে গেছে। এ ছাড়া আউশ ধানের হালিচারা ও সবজিখেত নষ্ট হয়েছে। ইউপি সদস্য ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আগের ভাঙন মেরামতের বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একাধিকবার লিখিত দাবি জানানো হয়। উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায়ও বিষয়টি তুলে ধরা হয়। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন বাঁধের তিনটি স্থান ভেঙে গেল। বৃষ্টি হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইউএনও মিন্টু চৌধুরী বলেন, তিনিসহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গুলশান আরা চৌধুরী বিকেলে বাঁধের ভাঙনকবলিত স্থানগুলো সরেজমিনে দেখে এসেছেন। এ ব্যাপারে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। পাউবোর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, বাঁধ মেরামতের কোনো বরাদ্দ নেই। তবে আগামী অর্থবছরে বাঁধটি মেরামতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম