কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ঠাকুরগাঁওয়ের বুড়িবাঁধ সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছিল কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি রক্ষার্থে । কিন্তু সেই বাঁধ এখন কৃষকের কোনো উপকারে তো আসছেই না, বরং কয়েকশ হেক্টর জমির চাষাবাদ অসম্ভব করে তুলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অসময়ে বৃষ্টি, অতিবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক খরার কারণে এখন এ বুড়িবাঁধ কৃষকের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে বাঁধের সামনের নিচু জমি পানিতে তলিয়ে যায়। অন্যদিকে বাঁধের বিপরীতে উঁচু জমিগুলোয় খরা মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করা যায় না।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এ বাঁধ সংস্কার ও পরিচালনার জন্য তারা বাজেট চেয়ে আবেদন করেছেন। বাজেট পেলেই বুড়িবাঁধ সংস্কারের মাধ্যমে আবারো উপযোগী করে তোলা হবে।
ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে চিলারং উপজেলায় বুড়িবাঁধ সেচ প্রকল্প নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এর উদ্দেশ্য— জলাবদ্ধতা ও খরায় ফসলি জমি রক্ষা। আর প্রয়োজনীয় সেচ সুবিধার মাধ্যমে ফসলের উত্পাদন বৃদ্ধি।
ঠাকুরগাঁও পাউবোর তথ্যমতে, বন্যা, জলাবদ্ধতা ও খরায় প্রতি বছরই কৃষকের ফসলহানি হয়। প্রকল্প এলাকার মধ্যে ২ হাজার ৮৫৮ হেক্টর কৃষিজমি অতি নিচু হওয়ায় বর্ষায় ৪ থেকে ৬ মিটার গভীর পানিতে ডুবে থাকে। অথচ ওই এলাকার প্রধান ফসলই ধান। চাষীদের দুর্দশা লাঘবে ১৯৮০-৮২ সালে বুুড়িবাঁধ সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের বাম খালের দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৩২ কিলোমিটার আর ডান খালের দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ১২ কিলোমিটার।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একেএম মাউদুদুল হক জানান, প্রকল্পের আওতায় আকচা, চিলারং, রহিমানপুর, আখানগর— চারটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি উপকৃত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে এটি কৃষকের কাজে আসছে না। বর্ষা মৌসুমে বাঁধের সামনে ১০০ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে যায়। তিনি জানান, এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পাউবো কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। চিলারং এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম, চৈতি বর্মণ, আব্দুর রশিদসহ অনেকে বলেন, কথা ছিল বিশেষ করে খরা মৌসুমে ধান আবাদে প্রকল্পটি কাজে আসবে। এখন দেখি তার উল্টো— যখন পানি থাকে তখন সবখানেই পানি আর পানি; আর যখন খরা তখন কোথাও পানি নেই। প্রকল্পটি করে আরো ক্ষতি হয়েছে কৃষকের।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, বাঁধ সংস্কার ও পরিচালনার জন্য বাজেট চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বাজেট পেলেই এটি সংস্কার করা হবে এবং এলাকার কৃষকের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটবে।
সুত্রঃ বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম