কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পিরোজপুরের কাউখালীসহ উপকূলীয় খাল-বিল-নালায় পানির প্রবাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে নানা প্রজাতির দেশি জাতের মাছের পোনার বিচরণ বাড়ছে। চিংড়ি ও দেশি মিঠাপানির মাছের ছোট পোনা ধরার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশের তৈরি বিশেষ ফাঁদ। মাছ ধরার এ ফাঁদের পরিচিতি চাঁই নামে। গ্রামাঞ্চলে মাছ ধরার সবচেয়ে আদি উপকরণের মধ্যে একটি হচ্ছে বাঁশের তৈরি চাই।
গ্রীষ্মের শুরু থেকে গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল ও নদী-নালায় চাঁই দিয়ে মাছ ধরার ধুম পড়ে যায়। যা চলতে থাকে ভাদ্র-আশ্বিন মাস পর্যন্ত। পিরোজপুরের কাউখালীসহ উপকূলের অন্যান্য উপজেলার হাটবাজারগুলোতে মাছ ধরার এই উপকরণটির বাজারজাত ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এসব এলাকার বাজারে প্রতিদিন হাজার হাজার চাঁই বিক্রি হচ্ছে। কাউখালীর চাইয়ের মোকামে সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার দুই দিন বসছে চাঁইয়ের বড় বাজার। মাছ ধরার এই ফাঁদ নিয়ে বিক্রেতারা বসছেন হাটের পাশের খেয়াঘাট সড়কের দুইধারে। এখানে গড়ে উঠছে চাঁই বেচাকেনার বিরাট বাজার।
জানা গেছে, পিরোজপুরের কাউখালীর সন্ধ্যা নদী-তীরবর্তী দক্ষিণ বাজার হচ্ছে এ অঞ্চলের চাঁইয়ের সবচেয়ে বড় মোকাম। এখান থেকে পাইকারি দরে চাঁই কিনে নিয়ে ব্যবসায়ীরা উপকূলের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে থাকেন। নাজিরপুর উপজেলার গাওখালী গ্রামের চাঁই ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার জানান, নাজিরপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে গড়ে উঠেছে চাঁই তৈরির শিল্প। এ ছাড়া খুলনা বাগেরহাট, রাজাপুর, হুলারহাট এলাকায়ও বাণিজ্যিকভাবে চাঁই তৈরি হয়ে থাকে। এসব চাঁই কাউখালীর বড় মোকামে সরবরাহ হয়ে তা উপকূলের হাটবাজারে বাজারজাত হয়। আকারভেদে ৮০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় একেকটি চাঁই।
বিক্রেতা মো. ফরিদ বললেন, প্রতিহাটে তিনি ৮০ থেকে ৯০টি চাঁই বিক্রি করে থাকেন। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার বিক্রি অনেক বেশি। তার মতো আরো ১০-১৫ জন বিক্রেতা রয়েছেন এ হাটে। কাউখালীর কাঠালিয়া গ্রামের কৃষক বেলায়েত জানান, এবার জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথমদিকেই বৃষ্টিপাতে নদীর পানি বেড়েছে। এতে মাঠ-ঘাট পানিতে ভরে যাওয়ায় দেশি প্রজাতির পুঁটি, কই মাছসহ চিংড়ির আনাগোনা শুরু হয়েছে। এ মাছ ধরার সবচেয়ে সহজ কার্যকর উপকরণ হচ্ছে বাশের চাঁই।
সুত্র, ইত্তেফাক/ এম ইসলাম