কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
হাওরে ধান কাটা ও মাড়াই কাজের ধুম পড়েছে।ধানের মৌ মৌ গন্ধে মধুময় এখন হাওরের বাতাস। চারিদিক কৃষকের কন্ঠে আনন্দের গানে মুখরিত। গাঁয়ে গাঁয়ে সোনার ফসল গোলায় তোলা হচ্ছে।কৃষকদের জন্য বিগত দুই বছর ফলসহীন ছিল। কিন্তু এ বছর কৃষাণ কৃষানীরা কষ্ট ভুলে দিনরাত আনন্দে মাতোয়ারা। তারা ঘরে তুলছে নতুন ধান। হাওরের মানুষের বোরো ফসল একমাত্র ভরসা।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন ১লা বৈশাখ দুপুরে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওরে বোরো ধান কাটার সময় সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা জেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মেহেদী মাহমুদ আকন্দ ও পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আক্তারুজ্জামান। মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রসাশন ও নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও সাংবাদিকরা। তারা বর্গাচাষীদের সঙ্গে ধান কাটার আনন্দ ভাগ করে নেন। এ সময় ডিঙ্গাপোতা হাওরে ধানকাটার কাজে কর্মরত কৃষক ও বর্গা চাষীদের মাঝে লুঙ্গি, গেঞ্জি ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
এ সময় কৃষকদের মাঝে উপস্থিত হন হাওরপাড়ের কৃষক অ্যাডভোকেট আব্দুল হান্নান রতন, কৃষক মোঃ সিরাজ উদ্দিন তালুকদার, কৃষি অফিসার মোঃ মফিজুল ইসলাম নাফিজ, কৃষক অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, কৃষক অহিদ আহম্দে, বর্গাাচাষী শহিদুল ইসলাম, আঃ সালাম, রুক্কন মিয়া, মোঃ আবু তাহের, বাচ্চু মিয়া, মোঃ ফুল মিয়া প্রমুখ।
ঐতিহাসিক ডিঙ্গাপোতা হাওরের একুশের দিঘি এলাকায় উচু ফাঁকা জায়গায় ক্ষেত থেকে ধান কেটে এনে মাড়াই করা হচ্ছে। মাঘান সিয়াধার ইউনিয়নের মাঘান, কুড়েরপাড়, শেওড়াতলী, পুটিউগা, বেথাম, গৌরাকান্দা, পেরিরচর, ঘোড়া উৎরা , গ্রামের শত শত কৃষক দিনরাত ধানকাটা ও মাড়াই করে সাথে সাথে ঐ স্থান থেকেই ভিজা ধান সহজে বিক্রি করতে পারছেন।
গত বছর এই দিনে হাওরে বন্যার পানিতে কৃষকের আধা পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। এবার বোরো মৌসুমে সরকার বন্যা প্রতিরোধে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের জন্য কোটি টাকা বরাদ্ধ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসন মাটির বাঁধ নির্মানের কাজ বাস্তবায়ন করে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ কর হয়। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। হাওর ঘুরে দেখা গেছে ধান আর ধান।
কৃষকরা জানায়, এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। সামনে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে তাদের অনটন ঘুচে যাবে। খাদ্য উদ্বৃত্ত এই এলাকার কৃষকরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমান ধান রপ্তানি করে তাদের দৈনন্দিন খরচ মিটিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে।
সুত্র, ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম