কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
মরিচ এখন আর শুধু রান্নার সাধারণ একটি উপাদান নয়, বাসাবাড়ি, এমনকি ছাদে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজেও ব্যবহার করা যাবে। মরিচের এমনই তিনটি জাত উদ্ভাবন করেছেন বগুড়ার শিবগঞ্জে অবস্থিত মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। জাতগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে বারী অর্নামেন্টাল মরিচ-১, বারী অর্নামেন্টাল মরিচ-২ ও বারী অর্নামেন্টাল মরিচ-৩। টানা চার বছর গবেষণার পর তারা এ সাফল্য অর্জন করেছেন। শিগগিরই জাত তিনটি অনুমোদনের জন্য বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সিতে পাঠানো হবে।
শিবগঞ্জ মসলা গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মালি ও হাঙ্গেরি থেকে ২০ প্রকারের বীজ (জার্মপ্লাজম) সংগ্রহ করে ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। টানা চার বছর গবেষণার পর তিনটি জাতকে (জার্মপ্লাজম) প্রাথমিকভাবে জাত হিসেবে অবমুক্তির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
শিবগঞ্জ মসলা গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে শৌখিন মানুষ যারা টবে ফুল চাষ, ছাদে বাগান ও রান্নাঘরের পাশে সবজি বাগান করেন, তারা বাড়ির সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য টবে বারী অর্নামেন্টাল মরিচের চারা লাগাতে পারেন। হলদে সাদা, বেগুনি, কালচে বেগুনি, সাদা, সবুজ, গাঢ় সবুজ রঙের এ মরিচগুলো একদিকে বাড়ির সৌন্দর্যবর্ধন করবে, অন্যদিকে রান্নার কাজেও ব্যবহার করা যাবে। বাসার ছাদেও এর চাষাবাদ করা যাবে।
শিবগঞ্জ মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু হেনা ফয়সাল ফাহিম জানান, বারী অর্নামেন্টাল মরিচ সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি, খাবারের সালাদ হিসেবে এবং রান্নায় ব্যবহার করা যাবে। এ মরিচ মূলত রবি মৌসুমের ফসল। তবে টবে লাগালে সারা বছর ধরে চাষ করা যাবে। চারা লাগানো থেকে দুই মাসের মধ্যে এর ফলন মিলবে। প্রতিটি গাছে দেড়শ থেকে দুশটিরও বেশি মরিচ উৎপাদন হবে। মরিচগুলো দেখতে হবে গোল, লম্বাটে, ত্রিকোণ এবং ঝুঁটি আকারে।
ফয়সাল ফাহিম আরও জানান, মরিচগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কোনোটা ঝাল, কোনোটা মাঝারি ঝাল, আবার কোনোটা উচ্চ ঝালযুক্ত। ঝালহীনও রয়েছে। তবে ঝালের পাশাপাশি কিছু কিছু মরিচ খাবারে লাল রঙ ছড়াবে। স্বাদও হবে ভিন্ন ভিন্ন। এর রঙ হবে হলদে সাদা, বেগুনি, লাল, সবুজ, কালচে বেগুনি, সাদা, সবুজ, গাঢ় সবুজ। যা টবে করে বাড়ির বারান্দায় বা ছাদে রাখলে রঙ ছড়াবে, এমনকি সৌন্দর্যও বাড়াবে।
মরিচের এই জাত তিনটি উদ্ভাবনের পর নানা অঞ্চলের আবহাওয়ায় চাষের উপযোগী করতে এরই মধ্যে গাজীপুর ও মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র, ফরিদপুর ও লালমনিরহাট মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রে পাঠানো হয়। এসব জেলায় এর সাফল্য পাওয়া যায়। এসব কেন্দ্রের গবেষণা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অচিরেই অর্নামেন্টাল মরিচের তিনটি জাতের স্বীকৃতি পেতে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সিতে আবেদন করা হবে। বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির অনুমোদন পেলেই বিএডিসি বীজ উৎপাদন শুরু করতে পারবে। আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তা জাত হিসেবে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারবে।
সুত্র, আমাদের সময়/ কৃপ্র/এম ইসলাম