‘জানুয়ারি থেকে বেতন-ভাতা বন্ধ শ্রমিক-কর্মচারীদের’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
অবশেষে ঠাকুরগাঁও চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা নেমে পড়েছেন আখ চাষে। আখ সঙ্কট দূরীকরণ ও চিনি আহরণের হার বাড়াতে এ উদ্যোগ কর্তৃপক্ষের। তবে, শ্রমিক-কর্মচারীরা বলছে, ছয়মাস ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। আর আখ চাষীরা বলছে, আখের টাকা সময়মতো পরিশোধে মিল কর্তৃপক্ষের গড়িমসি এবং সার-কীটনাশক সরবরাহে দেরি করে। এ কারণে দিন দিন আখের আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছে তারা।
জমি নেই অনেকের, তাই জমি ভাড়া নিয়ে আখ চাষ করছে ঠাকুরগাঁও চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। মিল কর্তৃপক্ষের এই আদেশ সাদরে গ্রহণ করলেও মনে আনন্দ নেই তাদের। গত জানুয়ারি থেকে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ। পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। এ অবস্থায় আখ ক্ষেতের পরিচর্যা ও মানসম্মত আখ উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।
মিল কর্তৃপক্ষ বলছে, মিলের উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় বেতন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর আখ চাষের জন্য কৃষি উপকরণ ও ঋণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এদিকে মিলে আখ সরবরাহ করে সময় মতো টাকা না পাওয়ার অভিযোগ চাষীদের। তার ওপর আখ চাষের উপকরণ, উন্নতজাতের বীজ সরবরাহ না করাসহ নানা কারণে আখের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে তারা। আখের জমিতে গম-ভুট্টা, সবজিসহ লাভজনক ফসল ও ফলমূল চাষ করছে তারা।
ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস শাহী জানান, গেল মৌসুমে ১ লাখ ৩ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও মাড়াই হয় সাড়ে ৮৪ হাজার মেট্রিক টন। এই পরিমাণ আখ থেকে উৎপাদন হয় সাড়ে ৪ হাজার টন চিনি। উৎপাদিত চিনি অবিক্রিত থাকায় চরম অর্থ সঙ্কটে পড়েছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। মিলে পড়ে আছে ৪ হাজার ৯শ’ ৪৩ মে. টন চিনি। এবার আখ সঙ্কট মোকাবেলায় ৮ হাজার একর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে আবাদ হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার একর জমিতে। আর এর মধ্যে শ্রমিক কর্মচারীরা আবাদ করেছে ৬শ’ একর জমিতে। মিলের চিনি বিক্রি এবং শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন-এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্টদের।
কৃপ্র/এম ইসলাম