কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি ছিল সাদা সোনাখ্যাত বাগদা ও গলদা চিংড়ি চাষ। কিন্তু সম্প্রতিক সময়ে পরপর কয়েক মৌসুম মড়ক লেগে ব্যাপক লোকসানের শিকার হয়েছেন চিংড়ি চাষীরা। বিদেশের বাজার হারিয়েছে চিংড়ি চাষিরা। এ পরিস্থিতিতে আরেক রফতানিমুখী কাঁকড়া চাষের দিকে ঝুঁকছেন বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলের চাষিরা।
আন্তর্জাতিক বাজারেও বাংলাদেশী চিংড়ির চাহিদা গেছে কমে। কয়েক বছরে গলদা চিংড়ির দাম কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ফলে নিরুপায় চাষীরা হয় ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন অথবা ঝুঁকছেন কাঁকড়া চাষে।
বাগেরহাট জেলা মত্স্য বিভাগ সুত্র বলছে ২০১৫ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কাঁকড়া ঘের গড়ে উঠেছে। অনেকে বাগদার ঘেরে কাঁকড়ার চাষ শুরু করেছেন। সবচেয়ে বেশি কাঁকড়া চাষ হচ্ছে রামপাল উপজেলায়। এখানে ৪৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় হাজার চাষী কাঁকড়া চাষ করছেন।
চাষীরা বলছেন , কাঁকড়ার রোগবালাই কম, দাম বেশি তাই চিংড়ি ছেড়ে এদিকে ঝুঁকছেন তারা। বাগেরহাটে দুই ধরনের কাঁকড়ার চাষ হয়। পুরুষ কিশোর কাঁকড়া বড় করে বিক্রি করা এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক মা কাঁকড়া ঘেরে ছেড়ে পেটে ডিম হওয়ার পর বিক্রি করা। চাষীরা বাক্স পদ্ধতি ও ঘেরে পাটা দিয়ে এ দুই পদ্ধতিতেই কাঁকড়া চাষ করেন। এসব কাঁকড়ার খাদ্য হিসেবে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত পুঁটি, তেলাপিয়া মাছ ও কিছু সস্তা সামুদ্রিক মাছ দেয়া হয়।
রামপাল উপজেলা জ্যেষ্ঠ মত্স্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, বিশ্ববাজারে কাঁকড়ার দাম অনেক বেশি। কৃষকরা অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ করতে পারেন। এ কারণে অনেকেই কাঁকড়া চাষে ঝুঁকছেন।
বাগেরহাট জেলা মত্স্য কর্মকর্তা মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাগদা চিংড়িতে রোগবালাই বৃদ্ধি পেয়েছে। বহির্বিশ্বে বড় গলদা চিংড়ির দামও কমেছে। ফলে বাগেরহাটের অনেক চাষ কাঁকড়া চাষ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে কুচিয়া ও কাঁকড়া চাষ এবং গবেষণা প্রকল্পের আওতায় চিংড়ির পাশাপাশি চাষীদের কাঁকড়া চাষে উদ্বুদ্ধ করতে শুরু করি। বর্তমানে বাগেরহাট জেলায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কাঁকড়া ঘের গড়ে উঠেছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম