কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
বিগত দিনে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি। গত অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি ১১৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ এক দশকের ব্যবধানে রফতানি বেড়েছে প্রায় ১৭৫ শতাংশ। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে ।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাটের পাশাপাশি জুট ইয়ার্ন, টুওয়াইন, চট ও বস্তা রফতানি করা হয়। এর পাশাপাশি রফতানি হয় হাতে তৈরি বিভিন্ন পাটজাত পণ্য ও কার্পেট।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মধ্যপ্রাচ্য সংকট ও বৈশ্বিক আর্থিক সংকটে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে। পাশাপাশি দেশীয় চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোয় দেখা দেয় কর্মহীনতা, যার প্রভাব পড়ে পাটের উৎপাদনেও। তবে পরবর্তী সময়ে রফতানি পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণ, কৃষকের ন্যায্য দাম প্রাপ্তি, রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিলগুলোকে সক্রিয় করা ও দেশের অভ্যন্তরে পাট পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
যেমন জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) পাটপণ্যের বহুমুখীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে। এরই মধ্যে ২৩৫ রকম বহুমুখী পাটপণ্য তৈরি করা হয়েছে, যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রফতানিও হচ্ছে। এছাড়া পলিথিনের বিকল্প ‘সোনালি ব্যাগ’, ভিসকস, কম্পোজিট জুট টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস পণ্য, চারকোল এবং পাট পাতার পানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে পাট শিল্পে নতুন দিগন্তের উন্মোচনে কাজ করা হচ্ছে।
‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০’-এর আওতায় ১৭টি পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ বাজারে পাটের বস্তার চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বহুমুখী পণ্য ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি ও অপচয় রোধে কাজ করা হচ্ছে। এসব উদ্যোগের ফলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের পাট শিল্প।
এ বিষয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, এ খাতের উন্নয়নে একমুখী পদক্ষেপ না নিয়ে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পাটের বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রচলিত ও দীর্ঘদিনের বাজারের পাশাপাশি নতুন বাজারে পণ্য রফতানি করা হচ্ছে। বেসরকারি খাতকে পাটপণ্য উৎপাদন ও রফতানিতে সব ধরনের সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনকে (বিজেএমসি) স্বচ্ছ ও দক্ষভাবে পরিচালিত করা হচ্ছে। আগের তুলনায় লোকসানও কমে এসেছে। আবার পাটের উৎপাদন বাড়াতে কৃষককে প্রণোদনা ও আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যার সুফল আমরা এখন পাচ্ছি।
কৃপ্র/এম ইসলাম