কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
নওগাঁয় প্রতি বছর বাড়ছে মিষ্টিকুমড়ার আবাদ। সবজিটি আবাদে তুলনামূলক কম সময়, শ্রম ও খরচের কারণে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার কুমড়া পাঠানো হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে কৃষকদের দাবি, তারা সবজিটির কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। ফলে উৎপাদন খরচ বাদে তাদের লাভ থাকছে খুবই কম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর নওগাঁয় মোট ৩৬৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টিকুমড়ার আবাদ করা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১০৫ হেক্টর বেশি। গত বছর জেলায় সবজিটির আবাদ হয় ২৬০ হেক্টর জমিতে। এবার সদর উপজেলায় ৭৫ হেক্টর, বদলগাছীতে ৬০ ও মান্দায় ৬০ হেক্টরে মিষ্টিকুমড়ার আবাদ হয়েছে।
সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আজাহার আলী জানান, গত বছর তিনি ১০ কাঠা জমিতে মিষ্টিকুমড়ার আবাদ করেছিলেন। এ বছর করেছেন ১৫ কাঠায়। চাষ, সার ও কীটনাশকসহ আনুষঙ্গিক খরচ হয়েছে প্রায় ১১ হাজার টাকা। এ থেকে উৎপাদিত মিষ্টিকুমড়া বিক্রি করেছেন ২৫ হাজার টাকা।
উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামের খাইরুল আলম বলেন, যে ফসল উৎপাদনে বেশি লাভ হয়, আমরা সে ফসলের আবাদ বেশি করি। মিষ্টিকুমড়া লাভজনক ফসল। এটি উৎপাদনে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১৭-১৮ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় উৎপাদন হয় ১১০ থেকে ১২০ মণ। বর্তমানে পাইকারি বাজারে ৮-১০ টাকা কেজি দরের প্রতিটি কুমড়া খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। তবে এ দামে তাদের খুব একটা লাভ হচ্ছে না। দাম আরেকটু ভালো হলে এ অঞ্চলে মিষ্টিকুমড়ার আবাদ আরো বাড়বে।
বর্ষাইল গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, তারা অধিকাংশ ফসলেরই ন্যায্য দাম পান না। তারা প্রতি কেজি মিষ্টিকুমড়া ৮-১০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি করেন। কিন্তু খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়। ফলে কৃষকে চেয়ে বরাবরই ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হয়।
সদর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের পাইকারি ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা তাদের মিষ্টিকুমড়া আড়তে নিয়ে আসেন। এ এলাকার উৎপাদিত মিষ্টিকুমড়া সুস্বাদু হওয়ায় বেশ চাহিদা রয়েছে। এখান থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০-২৫ টন মিষ্টিকুমড়া ঢাকা, যশোর, খুলনা ও নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন, কয়েক বছর ধরে মাচায় মিষ্টিকুমড়া আবাদ করছেন চাষীরা। মৌসুমভিত্তিক ফসল চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হয়। কৃষকদের মাঝে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনেও ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
তথ্যসুত্র, দৈনিক বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম