কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
বগুড়া জেলায় এবার পাট আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলন হয়েছে দারুণ। এক বিঘা জমি থেকে পাট পাওয়া গেছে প্রায় ১২ মণ। একই সঙ্গে বাজারে পাটের দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। বিভিন্ন বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ফলে সব মিলিয়ে এ বছর দারুণ খুশি জেলার পাটচাষীরা।
নতুন পাট ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষীরা। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলছে পাট জাগ দেয়া থেকে আঁশ ছাড়িয়ে রোদে শুকানোর কাজ। এরই মধ্যে ধুনট, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলায় কৃষকরা কিছু পাট বিক্রি করেছেন। এছাড়া সদর, শিবগঞ্জ, কাহালু, আদমদীঘি ও শেরপুরে পুরোদমে পাট শুকানোর কাজ চলছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮১৫ বেল। এবার পাট চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূল ছিল। বৃষ্টিপাতও হয়েছে সময়মতো। তাছাড়া জাগ দেয়ার জন্য নদী-নালা ও বিলে পর্যাপ্ত পানি রয়েছে। যারা এরই মধ্যে পাট বিক্রি শুরু করেছেন, তারা দাম ভালো পাচ্ছেন।
ধুনট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ধুনটে ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বন্যার আগেই এখানকার বেশির ভাগ পাট কাটা হয়। যমুনা নদীর পানি বাড়লেও পাটের কোনো ক্ষতি হয়নি।
এ উপজেলার চাষীরা জানান, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয়েছে ৭-৮ হাজার টাকা। অন্যান্য বছর বিঘাপ্রতি ৮-১০ মণ পাট পাওয়া যায়। তবে এবার এর পরিমাণ প্রায় ১২ মণ।
এরই মধ্যে তোষা জাতের পাটের মণ ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মেছতা জাতের পাটের মণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। পাশাপাশি পাটকাঠিও বিক্রি করে বেশ ভালো লাভ হচ্ছে।
এ উপজেলার বেলকুচি গ্রামের কৃষক আজিবর রহমান জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো তিনি চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। বিঘাপ্রতি প্রায় ১২ মণ পাট পেয়েছেন। গত বছরের চেয়ে এবার ফলনের পরিমাণ বেশি। স্থানীয় হাটে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মণদরে পাট বিক্রি করছেন।
বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকার আব্দুর রহিম জানান, গত বছর পাটের দাম শুরুতে ভালো ছিল। পরে দাম কমে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। এ বছর হাটে প্রতি মণ ভালো মানের পাটের দাম উঠছে ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা। আর শুকনা পাটের মণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়।
ধুনট উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান জানান, এ বছর পাটচাষীরা বন্যার আগেই পাট কেটে ভিজিয়ে আঁশ ছাড়িয়ে নিতে পেরেছেন। স্থানীয় বাজারে পাটের দামও বেশ ভালো। তাই কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাচ্ছেন। এ দাম স্থিতিশীল থাকলে আগামী মৌসুমে পাট চাষে কৃষকের আগ্রহ আরো বাড়বে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, জেলার কৃষকরা পাট চাষে বেশ অভিজ্ঞ। গত বছরের চেয়ে এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮১৫ বেল নির্ধারণ করা হলেও তা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তথ্যসুত্র, বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম