কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
আমাদের দেশে নিশিন্দা গাছ এখন আর খুব একটা চোখে পড়ে না। নিশিন্দা গাছ খুবই কষ্ট সহিষ্ণু এবং প্রতিকুলতার মাঝেও নিজেকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম। রাস্তার ধার, জমির আইল, বাঁধের ধার, পতিত জমি, বন-জঙ্গল ও পাহাড়ের ঢালে নিশিন্দা গাছ জন্মাতে দেখা যায়।
নিশিন্দা চট্টগ্রাম ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এলাকায় নিশিন্দা গাছ বেশি দেখা যায়। গাছের কাঠ ও শাখা-প্রশাখা বেশ শক্ত মানের হয় এবং গাছের বৃদ্ধি ধীরগতি সম্পন্ন। গাছের কাঠের রং ধূসর থেকে সাদা।
নিশিন্দা কাঠ বিভিন্ন ধরনের নিমার্ণ কাজ ও গ্রামাঞ্চলে জালানি হিসেবে ব্যবহার হয়। ছাই থেকে রং তৈরি করা হয়। গাছের শাখা-প্রশাখা অধিক। যৌগিক পাতা লম্বায় ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার। গঠন অসমান ও বষার্কৃতির, অগ্রভাগ সুচালো এবং ৩ থেকে ৫ ফলকবিশিষ্ট।
নিশিন্দা পাতা কচলালে তা থেকে উগ্র গন্ধ বের হয়। এর ফুল ফোটার মৌসুম বষার্ ও শরৎকাল। এ সময়ে গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে লম্বা ঊধ্বর্মুখী মঞ্জুরিতে থোকায় থোকায় ক্ষুদ্রাকৃতির নীলাভ থেকে বেগুনী রঙের ফুল ফোটে। ফুল মঞ্জুরির নিচ থেকে ফোটা শুরু হয়ে ধীরে ধীরে উপরেরগুলো ফোটে। ফুটন্ত ফুলের সৌন্দযর্ মনোরম ও নজরকাড়া। ফুল গন্ধহীন। ফুল শেষে গাছে ফল ধরে। ফল আকারে ছোট ও ডিম্বাকৃতির। বীজ থেকে নিশিন্দার বংশ বিস্তার করা যায়।
নিশিন্দার ডাল কাটিং পদ্ধতির মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার সহজ ও প্রচলিত। বতর্মান সময়ে নিশিন্দা চাষের প্রচলন তেমন না থাকলেও হেজ (ঐবফমব) উদ্ভিদ হিসেবে এর বহুল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। নিশিন্দার পাতা, ফুল, ফল, বীজ, মূল সবই ভেষজগুণে গুণান্বিত।
নিশিন্দার গরম পানিতে পাতার নিযার্স ক্রনিক ব্যথা, জ¦র, বাত জ¦র, বাত ব্যথা, মাথা ব্যথা উপশম করে। তাছাড়া সব ধরনের চমের্রাগ, সদির্, হাঁপানি, ঠাণ্ডা জনিত রোগে নিশিন্দা বেশ কাযর্কর। কোথাও কোথাও নিশিন্দা পাতা সেদ্ধ করে সে পানি দিয়ে শিশুদের গোসল করাতে দেখা যায়।
নিশিন্দা ভেষজগুণে গুণান্বিত জৈব ব্যবহার বহুকাল ধরে। এর পাতা রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে বীজের সাথে মিশিয়ে বীজ সংরক্ষণ করলে তাতে পোকার আক্রমণ হয় না এবং পাতার রস থেকে তৈরি করা জৈব কীটনাশক ব্যবহার পরিবেশসম্মত ও অথর্ সাশ্রয়ী চাষাবাদে ভূমিকা রাখে। সাবির্ক বিবেচনায় মানব কল্যাণে নিশিন্দা প্রকৃতি ও পরিবেশের এক অনন্য উপহার।
কৃপ্র/এম ইসলাম