কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
অনুকূল আবহাওয়া ও যথাযথ পরিচর্যার কারণে মৌলভীবাজারে কমলার উৎপাদন বেড়েছে । এবার কমলার আকার বড় হওয়ায় দামও ভালো পাচ্ছেন চাষীরা। হাসি ফুটেছে এখানকার কৃষকদের মুখে।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার জুড়ী, কুলাউড়া, বড়লেখাসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ২৫০ একর জমিতে এবার কমলার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে জুড়ীতে ১৫০, বড়লেখায় ৭৫ ও কুলাউড়াসহ অন্য উপজেলায় ২৫ একর জমিতে ফলটির আবাদ হয়েছে। জেলাজুড়ে কমলার বড় বাগান রয়েছে ১৩০টি। কমলাচাষী রয়েছেন প্রায় ৪৫০। গত বছর প্রতি হেক্টরে কমলা উত্পাদন হয়েছিল তিন থেকে সাড়ে তিন টন। এ বছর উত্পাদন বেড়ে প্রায় সাড়ে চার টন হয়েছে।
জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের রূপাছড়া ও লালছড়ার পাহাড়ি এলাকায় কমলা বাগান ঘুরে দেখা যায়, ফল বাছাই করে ঝুড়ি ভর্তি করছেন চাষী ও শ্রমিকরা। সেখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কমলা কিনে সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
চাষীরা জানান, তারা পাইকারিভাবে ১০০টি কমলা ২০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। এ বছর কমলার আকার কিছুটা বড় হয়েছে।
এ কারণে দামও গতবারের চেয়ে তুলনামূলক বেশি পাচ্ছেন। তবে তারা অভিযোগ করেন, কিছু ফল পরিপক্ব হওয়ার আগেই ঝরে পড়েছে। সময়মতো কৃষি বিভাগের সহযোগিতা না মেলায় এমন হয়েছে বলে দাবি তাদের। তারা আরো জানান, আগে এখানে কমলা চাষের একটি প্রকল্প ছিল। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকে প্রকল্পটি বন্ধ। প্রকল্প চলাকালীন তারা প্রশিক্ষণ ও তাত্ক্ষণিক পরামর্শ পেতেন। তাই পুনরায় তারা প্রকল্পটি চালুর দাবি জানান।
কথা হলে লালছড়া গ্রামের কমলাচাষী হারুন মিয়া জানান, তার প্রায় এক হাজার কমলা গাছ রয়েছে। এ বছর প্রায় আড়াই লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছেন। আরো আড়াই লাখ টাকার মতো বিক্রি হবে বলে আশা করছেন।
মো. বাবুল মিয়া নামে আরেক কমলাচাষী জানান, এবার জুড়ীর লালছড়া, জরিছড়া, রূপাছড়া, শুকনাছড়া ও হায়াছড়ার পাহাড়ি এলাকায় কমলার ভালো ফলন হয়েছে। তার কমলা বাগানে প্রায় ২০০ গাছ রয়েছে। কমলা ধরেছে অধিকাংশ গাছেই। এরই মধ্যে ফল বিক্রি শুরু করেছেন।
জুড়ী উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, কমলার উত্পাদন নিশ্চিত করতে ফল তোলার পর পরই গাছের ডাল ছাঁটাই ও খরার সময় সেচ দেয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে পৌষ থেকে ফাল্গুন মাসে সেচ দিলে রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হয়। এছাড়া প্রয়োজনে ছত্রাকনাশকও ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সব চাষী নিয়মিত এসব পদক্ষেপ না নেয়ায় অনেকে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাননি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, এখানে নাগপুরী, দার্জিলিং ও খাসি জাতের কমলা চাষ হয়। এর মধ্যে খাসি জাতের চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সঠিক পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনায় এ অঞ্চলে কমলার উত্পাদন আরো বৃদ্ধি পাবে।
তথ্যসুত্র- দৈনিক বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম