কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
‘উলটকম্বল’ ব্যাপক ভাবে সমাদৃত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় । আমাদের দেশে ভেষজ উদ্ভিদের অন্যতম একটি নাম এ উলটকম্বল। এশিয়ার প্রধান অঞ্চল এর আদি নিবাস। বাংলাদেশের সবর্ত্র উলটকম্বল গাছ জন্মাতে দেখো যায়। উলটকম্বল ২ থেকে ৩ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট গুল্ম জাতীয় চিরহরিৎ গাছ।
উলটকম্বল পাতার অগ্রভাগের দিকটা সরু, রং উজ্জ্বল সবুজ। পাতার বেঁাটা ও কচি ডাল খয়েরি লাল রঙের, ডগার পাতাগুলো লম্বা আকৃতির হয়ে থাকে। গাছের বাকল শক্ত অঁাশযুক্ত, পানিতে ভিজালেও নষ্ট হয় না। গাছের কাঠ নরম ও ধূসর বণের্র। নিদির্ষ্ট বয়সে এ গাছে ফুল ফোটে।
ভেষজ গুনে অনন্য উলটকম্বলের গাছের পাতা, ডাল ও মূলের ছাল বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গাছের ছাল ও ডাটা পানিতে ভিজিয়ে কচলালে পিচ্ছিল পদাথর্ বের হয়। মূলের ছাল ঋতুস্রাব নিয়ন্ত্রণকারী, তাছাড়া জরায়ু স্থানচ্যুতিতে ব্যবহৃত হয়। পাতার ডাটা প্রস্রাবের জালাপোড়া ও আমাশয় রোগের জন্য উপকারী এবং পাতা ও কাণ্ডের রস গনোরিয়া, স্ত্রী রোগে বেশ উপকারী।
গবাদিপশুর পাতলা পায়খানা, বিলম্ব প্রজনন, জরায়ুর রক্তক্ষরণ এবং হাঁস-মুরগির নানা প্রকার চিকিৎসায় উলটকম্বল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রায় সব ধরনের সুনিষ্কাশিত মাটিতে উলটকম্বল জন্মায়। তবে দো-আশ মটিতে ভালো জন্মে। গাছ ছায়া সহ্য করতে পারে এবং ছায়াতে বেশি ভালো হয়।
পাহাড়ি বনাঞ্চলের পাশা-পাশি গ্রাম, শহর, পারিবারিক বাগান, রাস্তার ধার, ভেষজ বাগান এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাগানে উলটকম্বল গাছ দেখা যায়।
বীজ থেকে ও ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা যায়। তবে বীজ থেকে বংশবিস্তার খুবই সহজ পদ্ধতি। বীজ সংগ্রহ পরবতীর্ ১ থেকে ২ মাস পর বীজ বপন করা যায়। বীজ বপনের পূবের্ পানিতে ২ ঘণ্টা ভিজিয়ে নিয়ে পানি ছেকে বাতাসে শুকিয়ে নিয়ে প্রস্তুতকৃত জমিতে বীজ ছিটিয়ে বা সারিতে বপন করা যায়। বীজ বপন পরবতীর্ জমি মই দিয়ে সমান করতে হবে ও বীজ ভালভাবে ডেকে দিতে হবে।
জমিতে বীজ বপনের উত্তম সময় অক্টোবর নভেম্বও মাস। তাছাড়া এ সময় বীজ বপনে ভালো চারা ও গাছ পাওয়া সম্ভব। উলটকম্বল গাছে তেমন সার প্রয়োগ করতে হয় না। প্রয়োজনে জমি অনুবর্র হলে অল্প পরিমাণ সার দিতে হবে। বিঘা প্রতি ৫ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি টিএসপি দরকার হয়। শুকনো মৌসুমে সেচের প্রয়োজন হলে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে আগাছা দমন করতে হবে। বীজ বপনের ৫ থেকে ৬ মাস পর গাছের পাতা, ডাল, মূল ব্যবহারের উপযোগী হয়।
কৃপ্র/এম ইসলাম