কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
হাওরাঞ্চলে বন্যায় ফসলহানি মোকাবেলায় নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। আর এ নতুন পদ্ধতিতে বোরো ফসল মাত্র তিনমাসেই ঘরে তোলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের এনএটিপি-২ প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় এই গবেষণা পরিচালিত হয়।
গবেষকরা বলছেন, হাওরে সচরাচর এপ্রিলের শেষ বা মে মাসের প্রথম দিকে বন্যা হয়। বর্তমানে মার্চের শেষ বা এপ্রিলের প্রথম দিকে আকস্মিক বন্যা হয় যখন বোরো ধান কেবল পাকা শুরু করেছে। ফলে ঘরে তোলার আগেই বন্যার পানিতে ডুবে ব্যাপক ফসলহানি হয়। এরই প্রেক্ষিতে আগাম বন্যার কবল থেকে ফসলহানি মোকাবেলায় গবেষণা পরিচালনা করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, জমির ধান তিন-চতুর্থাংশ পাকলেই ঘরে তোলার মাধ্যমে সহজেই আগাম বন্যা মোকাবেলা করা সম্ভব। এজন্য স্বল্পমেয়াদি জাতের ধান, বিভিন্ন উফশী জাতের ধান, লম্বা জাতের ধান, প্রচলিত জাতের ধান, বেশি বয়সে চারা রোপণ, আগাম চারা রোপণসহ সমন্বিত কৌশল অবলম্বন জরুরি।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে সম্ভাব্য বন্যার তারিখ ধরে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে স্বল্পমেয়াদী ধান যেমন বিনা ধান-১৪, ১০, ১৮ কিংবা ব্রি ধান-২৮, ৫৮, ৮১ রোপণ করতে পারলে সহজেই ফসলহানি এড়ানো সম্ভব। এছাড়া কান্দার জমিতে দীর্ঘমেয়াদী জাত যেমন ব্রি ধান-২৯, ৮১ রোপণ করা, নিচু জমিতে ব্রি ধান-২৮ কিংবা বিনা ধান-১৪ রোপণ করে তিন মাসের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। ৩৫-৪০ দিনের চারা রোপণ করেও ফসল ঘরে তোলা সম্ভব।
গবেষণায় দেখা গেছে, চলতি বছর জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখে জমিতে চারা লাগিয়ে এপ্রিল মাসের ৪ তারিখে ফসল কাটা সম্ভব হয়েছে। এতে হেক্টর প্রতি ৬.২ টন ফলন পাওয়া গেছে।
প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হাওরে বোরো ধান চাষ করলে আগাম বন্যায় ফসলহানির মাত্রা কমিয়ে আনার পাশাপাশি হাওরাঞ্চলে জীবনমানের উন্নয়ন সম্ভব।
কৃপ্র/এম ইসলাম