কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
সাতক্ষীরায় শীতকালীন সবজির উৎপাদন ভালো হলেও দাম নিয়ে হতাশ স্থানীয় কৃষকরা। বর্তমানে যে দামে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে, তাতে উৎপাদন খরচও উঠে আসবে না বলে জানিয়েছেন তারা। আর ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা বলছেন, স্থানীয় উৎস ছাড়াও জেলার বাইরে থেকে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে সবজির দাম কমতির দিকে আছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাত উপজেলায় ৯ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির আবাদ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে সদরে ২ হাজার ৪৫০ হেক্টর, কলারোয়ায় ১ হাজার ৭৩০, তালায় ১ হাজার ৭৬০, দেবহাটায় ৫৭৫, কালীগঞ্জে ১ হাজার ৯২০, আশাশুনিতে ৬৫০ ও শ্যামনগরে ৭১০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে জেলায় ৯ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছিল। সে হিসাবে এবার প্রায় ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। এবার জেলায় ফুলকপি, ওলকপি, বাঁধাকপি, পালংশাক, শিম, বরবটি ও টমেটোর আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, এ জেলায় বারো মাসই নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। গত মৌসুমের চেয়ে এবার সাতক্ষীরায় শীতকালীন সবজির আবাদ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও রোগবালাই দেখা না দেয়ায় ফলন ভালো হয়েছে।
সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের চাষী আমজাদ হোসেন চলতি মৌসুমে দুই বিঘা পরিমাণ শীতকালীন সবজি আবাদ করেছেন। এর মধ্যে দেড় বিঘায় ফুলকপি এবং বাকি জমিতে বাঁধাকপি আবাদ করেছেন। জমি থেকে এ পর্যন্ত দুই দফা ফুলকপি উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করেছেন তিনি। তবে যা দাম পেয়েছেন তাতে তিনি হতাশ। আমজাদ হোসেন বলেন, গত মৌসুমে বছরের এ সময়ে প্রতি কেজি ফুলকপি পাইকারিভাবে ২২ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম। এবার তা বিক্রি করতে হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ টাকায়। একই অবস্থা বাঁধাকপির দামেও। বর্তমানে প্রতি মণ বাঁধাকপি ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের এই সময় মণপ্রতি বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছিল ৪৪০ থেকে ৪৮০ টাকায়।
আগড়দাড়ি গ্রামের কৃষক নুরুল আমিনও সবজির দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি জানান, সারা বছরই জমিতে নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করেন। চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে তিনি ওলকপি, বাঁধাকপি ও পালংশাক আবাদ করেছেন। গত মৌসুমে বছরের এ সময় প্রতি কেজি ওলকপি পাইকারিতে ২০ থেকে ২২ টাকা হয়েছিল। এখন তা বিক্রি করতে হচ্ছে ১৩ থেকে ১৪ টাকায়। ১২ টাকার বাঁধাকপি ৬ থেকে ৭ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ দামে বিক্রি করতে হলে উৎপাদন খরচও উঠে আসবে না।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা কাঁচামাল সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রওশন আলী জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় সবজির দাম কমে গেছে। স্থানীয় উৎস থেকে সরবরাহের পাশাপাশি জেলার বাইরে থেকেও প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ সবজি সাতক্ষীরায় আসছে। এ কারণে সব ধরনের শীতকালীন সবজির দাম কমতির দিকে আছে।
তথ্য সুত্র- দৈনিক বনিক বার্তা / কৃপ্/এম ইসলাম