ড. মো. হুমায়ুন কবীর: গতবছর ৩০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব জলবায়ু বিষয়ে সর্বোচ্চ ফোরাম কনফারেন্স অব দ্যা পার্টিজ-সিওপি (কপ-২১) সম্মেলন। এটি জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম যা সংক্ষেপে ইউএনএফসিসিসি নামে পরিচিত। সেই সম্মেলনে বিশ্ব পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের উপর কয়েকটি গুরুত্্পূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সিদ্ধান্তটি ছিল ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস বিষয়ে।
বিশ্বের প্রায় ২০০টির মতো দেশ একমত হয়ে প্যারিস চুক্তিতে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি শিল্প বিপ্লব পূর্ব সময়ের তুলনায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এবং সেখানে আরো সিদ্ধান্ত হয় যে, তা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করা হয়। তদানুযায়ী ২০১৬ সালের ২২এপ্রিলের মধ্যে উক্ত বাধ্যবাধকতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কথা ছিল। সবকিছু ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হলে ৪ নভেম্বর ২০১৬ থেকে চুক্তিটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। বাংলাদেশ জলবায়ুর বিষয়ে উদ্যোগী দেশগুলোর অন্যতম হওয়ায় নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই (২২এপ্রিল ২০১৬) চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেছে এবং ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে অনুসমর্থন করে এর সপক্ষে সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে।
কপ-২১ চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ছিল বিশ্বের ৫৫ দেশের অনুসমর্থন, যারা বিশ্বের মোটের উপর ন্যূনতম ৫৫ শতাংশ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। ইতোমধ্যেই ৬০ শতাংশের বেশি কার্বন নিঃসরণকারী ৮৪টি দেশের সংসদে উক্ত চুক্তির অনুসমর্থন অনুমোদন করা হয়। তথ্য পাওয়া গেছে, গত ২৪ অক্টোবর ২০১৬ তারিখের মধ্যে ১৯১টি দেশ চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেছে এবং ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৮৪টি সদস্য দেশ, যারা মোট বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের ৬০ দশমিক ৯৮ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। অথচ উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রতিনিধি হিসেবে ভারত ও চীন প্রথম থেকেই এ চুক্তির বিরোধী ছিল। শেষে বৈশ্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এবং প্যারিসে অনুষ্ঠিত জলবায়ু চুক্তির বাধ্যবাধকতা থাকায় তারাও সেটাতে স্বাক্ষর ও অনুস্বাক্ষর করেছে।
ইতোমধ্যে প্যারিস চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার জন্য পৃথিবীতে নিঃসৃত গ্রিনহাউজ গ্যাসের অন্তত ৫৫ শতাংশ নির্গমন করে এমন অন্তত ৫৫টি দেশের অনুসমর্থন বা অনুমোদনের শর্ত গত ৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে পূর্ণ হয়েছে। কাজেই কপ-২২ সম্মেলনের পূর্বেই ৪ নভেম্বরের মধ্যে চুক্তিটি বাস্তবায়নে আর কোন বাধা রইল না। আর এরকম একটি সফলতার প্রেক্ষাপটে ৭ থেকে ১৮ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে ১২ দিনব্যাপী কপ-২২ সম্মেলন পূর্ব নির্ধারিত স্থান হিসেবে মরক্কোর পর্যটন নগরী মারাকেশে অনুষ্ঠিত হয়ে তা এখন সফলভাবে চলছে। উক্ত সম্মেলনের ৭-১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে টেকনিক্যাল নেগোসিয়েশন পর্ব। এ নেগোসিয়েশনে যোগ দিতে সেখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে ছোট একটি দল নিয়ে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে মারাকেশে যোগ দিয়েছেন।
আগামী ১৫-১৭ নভেম্বর মূূল পর্বে বিশ্বের বিভিন্ন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান সমন্বয়ে হাই লেবেল সেগমেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব ও পরিবেশের জন্য কাজ করে ২০১৫ সালে জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু যোগ দিচ্ছেন। কপ-২২ সম্মেলন কার্যকর ও সফল করার জন্য এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের মতামত নেওয়ার অংশ হিসেবে সরকারি-বেসরকারি ও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফোরামের আলাপ আলোচনা শুরু হযেছে বেশ আগে থেকেই। সেজন্য সম্প্রতি রাজধানীতে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ(এপিপিজি) এর একটি সেমিনারে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জলবায়ু সম্মেলনকে যৌক্তিকভাবে সফল করার জন্য সকলকে মিলে একটি কার্যকরী প্রস্তাব তৈরীর আহবান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। সেই প্রস্তাব মারাকেশ সম্মেলনে পেশ করে আলোচনার মাধ্যমে দর কষাকষির পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
কপ-২২ সম্মেলনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এডিলেডে ‘থ্রি আর’ (রিডিউস, রিসাইক্লিং এন্ড রি-ইউজ) সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেও শিল্পবর্জ্যের ক্ষেত্রে থ্রি-আরের কৌশল ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব শিল্প কল-কারখানা স্থাপনের উপর জোর দেওয়া হয়। কারণ পরিবেশ দূষণ সবচেয়ে বেশি হয় শিল্প-কলকারখান বর্জ্য থেকে। সেখানে ভারী শিল্প হলে দূষণ বেশি হয় এবং মাঝারি বা ক্ষুদ্র শিল্প হলে দূষণ তুলনামূলক কম হয়। কিন্তু শিল্পে দূষণ হয় না এমন কথা বলা যায় না। আর সেজন্যই শিল্প স্থাপনে থ্রি-আর এর ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষন অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
সেখানে প্রথম ‘আর’ মানে ‘রিডিউস’ অর্থাৎ দূষণ কমাতে হবে। সেটা করার জন্য গ্রিনহাউজ গ্যাস কমানো, সিএফসি, এইচএফসি সৃষ্টিকারী পদার্থের ব্যবহার কমাতে হবে। ‘রিসাইক্লিং’ বা পুনরুৎপাদন অর্থাৎ একটি জিনিস তৈরী হওয়ার পর তা ব্যবহারের পর শেষ হওয়ার আগেই আবার পুনর্ব্যবহার করতে হবে। ‘রি-ইউজ’ মানে পৌনপোনিক ব্যবহার। যেমন কোন শিল্পের কাঁচামাল একবার ব্যবহার করলে সেটা উৎপাদন ও ব্যবহার হয়ে শেষ হলে পরে আবার তাকেই কাঁচামালের সাথে ব্যবহার করা। তাতে এসব উচ্ছিষ্টাংশ আর পরিবেশের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর করলেও তা খুবই কম মাত্রায় ক্ষতির কারণ হবে। এসব বিষয়ে যে সবার ধারণা থাকবে সেটা নয়। সেজন্য প্রয়োজনে যেসব দেশে পরিবেশবান্ধব ক্ষুদ্র, মাঝারি কিংবা বড় যে কোন ধরনের শিল্প কারখানা স্থাপন করতে হলে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এমন বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনে গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ড কিংবা বিশ্ব জলবায়ু তহবিল হতে প্রাপ্ত অনুদান বা অর্থ হতে খরচ করতে হবে।
অপরদিকে আবার কপ-২২ সম্মেলনের আগে মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় মন্ত্রী আানোয়ার হোসেন মঞ্জু কাউকে কোনরকম অহেতুক দোষরোপ না করে সকলে একত্রিত হয়ে জলবায়ুর বৈশ্বিক সমস্যাগুলো সমাধানে ব্রতী হওয়ার আহবান জানান। কারণ দেখা গেছে, জলবায়ু প্রশ্নে পরিবেশবাদী এবং এ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করে এমন অনেকের মধ্যে অনেক মতানৈক্য, একে অপরকে দোষারোপ করার একটি সংস্কৃতি চালু রয়েছে। যেমন এ বলছে কার্বন নিঃসণের জন্য ভারত বেশি দায়ী, আবার ও বলছে শিল্পবর্জ্য নির্গমনে চীন বেশি দায়ী, আবার কেউ কেউ বলছে আমেরিকা দায়ী, কেউ বলছে ইউরোপ দায়ী ইত্যাদি ইত্যাদি। যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিধর দেশ এবং তারাই মূলত জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, সেজন্য তারা শেষপর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তে সহযোগিতা দিবে কি না।
গতবছর কপ-২১ প্যারিস সম্মেলনে, আগে অনেক সন্দেহ ছিল শেষপর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সেখানে উপস্থিত হয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মেকাবেলায় গৃহীত পদক্ষেপের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে কি না। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামা যে শুধু সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেই তাঁর দায় সারেন তাই নয়। তিনি সেখানে কার্বন নির্গমন হ্রাস, গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস, বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস বিষয়ে বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশ সমন্বয়ে একটি বাধ্যবাধকতা চুক্তি স্বাক্ষরেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বলা চলে মূলত যুক্তরাষ্ট্র উদ্যোগ না নিলে এবং তারা আন্তরিক না হলে এ চুক্তি কখনোই স্বাক্ষর করা সম্ভব হতো না। তার আগে ১৯৯৭ সাল থেকেই এরকম একটি চুক্তি করার তোড়জোড় চলছিল। সেটা ছিলো চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে। এবার তা আরো আরেক ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর সেটি হলো পূর্বের চুক্তি বাস্তবায়ন করা। এটি কীভাবে বাস্তবায়ন হতে পারে এবং কীভাবেই বা তা ধাপে ধাপে কার্যকর ও বাস্তবায়নের দিকে এগুচ্ছে সেটা আমি এ প্রবন্ধের প্রথমদিকে কিছুটা বর্ণনা করেছি
। কিন্তু এবার সমস্যা দেখা দিয়েছে অন্য জায়গায়। আর সেটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাকালে বর্তমানে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগের ওবামা প্রশাসনের কয়েকটি নীতিনির্ধারণী বিষয় সম্পর্কে নেতিবাচক ভাবভঙ্গি প্রদর্শন করেছিল। তারমধ্যে অভিবাসী, অর্থনৈতিক কিছু নীতি, মধ্যপ্রাচ্য নীতি, নর্থ অ্যামেরিকান ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো) নিয়ে বর্তমান অবস্থানের পরিবর্তন, আঞ্চলিক ও কৌশলগত কিছু নীতি, নর্থ অ্যামেরিকান ফ্রি ট্রেড এরিয়া (নাফটা), ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য স্বাক্ষরিত বাধবাধকতা চুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে নিয়ে ট্রাম্পের নেতিবাচক ও বিপরীতমুখী অবস্থান রয়েছে ।
সেজন্য এবার যখন অনেক আশা নিয়ে গতবছরের চুক্তি বাস্তবায়নের দিকে আরো একধাপএগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক এমনই একটি সময় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে জলবায়ু বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন একজন লোক দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। কারণ তিনি তাঁর নির্বাচনী প্রচারের সময় বলেছিলেন যে, ‘এসব চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে’। স্বাভাবিক কারণেই সম্মেলনে উপস্থিত আশাবাদী বিশেষজ্ঞ ও সদস্যবৃন্দ এ বিষয়ে হতাশা ও তা বাস্তবায়নে না যেতে পারার একটি আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। সেজন্যই ৭ নভেম্বর ২০১৬ তারিখ হতে শুরু হওয়া এ সম্মেলনে মার্কিন নির্বাচন পরবর্তীতে ১০ নভেম্বরে এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনাতেও আগামী দিনে জলবায়ু চুক্তিটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি আগামী ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি শপথ নিয়ে হোয়াইট হাউজের কর্তৃত্ব গ্রহণ করবেন, তিনি কীভাবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তা এখন বলা যাচ্ছে না।
সেরকম আশঙ্কার ভিতর দিয়েই ১০ নভেম্বর সম্মেলনে পানি বিষয়ক নির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। আর আমরাতো একটি চিরন্তণ সত্য জানিই যে, পানি হলো পরিবেশের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পৃথিবীর তিন-চতুরাংশই পানি। আর অন্য কথায় পানিই জীবন। পানির অস্তিত্ব ছাড়া কোন জীবন বাঁচতে পারে না। সেজন্য বিজ্ঞানীরা চাঁদে কিংবা মঙ্গলগ্রহে জীবনের অস্তিত্বের জন্য পানির অস্তিত্ব খুজে বেড়ান সবার আগে। কাজেই পানিকে বাদ দিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণ হতে পারেনা।
ট্রাম্পর নেতিবাচক বিষয়টি যেহেতু আলোচনায় এসেছে, কাজেই ১৫-১৭ নভেম্বর সদস্য দেশসমূহের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান সমন্বয়ে হাই লেবেল সেগমেন্ট অনষ্ঠিত হবে সেখানে এর একটি সুরাহা করার চেষ্টা করা হবে। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করবেন।
এবারের মারাকেশ সম্মেলনে জলবায়ুর পবির্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো যাতে প্রতিশ্রুত জলবায়ু তহবিলের প্রতিশ্রুত অর্থ বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো যাতে ঋণের পরিবর্তে অনুদান হিসেবে অতি সহজেই পেতে পারে সেদিকেই সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে। কারণ ইতোমধ্যে সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকালে জলবায়ু ফান্ড হিসেবে ঋণ দেওয়ার কথা বলেন। সেটি অনুদান হিসেবে না দিলে ঋণ হিসেবে না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকেও। কাজেই এবারের কপ-২২ সম্মেলনের মূলত দুটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ- এক. প্যারিস সম্মেলনের পূর্ণ বাস্তবায়ন অনুমোদন এবং দুই. জলবায়ু পরিবর্তনের ফান্ড যথাসময়ে ক্ষতিগ্রস্তদেরকে তাদের ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে দেওয়া। কাজেই এ বিষয়গুলো সফলভাবে নিশ্চিত হবে এটাই প্রত্যাশা।
লেখক: ড. মো. হুমায়ুন কবীর, কৃষিবিদ ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
কৃপ্র/ এম ইসলাম