কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বাংলাদেশে বর্ষা মৌসুমে স্বল্প মেয়াদী আউশ ধানের চাষ করে প্রতিবছর প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ১ কোটি মেট্রিক টন অতিরিক্ত ধান উৎপাদন করা সম্ভব। আর এতে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশপাশি, খাদ্য নিরাপত্তাও সুসংহত হবে। এমন তথ্য জানালেন আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থার (ইরি) কনসালটেন্ট ড. এম জি নিয়োগী।
তিনি জানান, এপ্রিল-মে মাসের প্রথম দিকে বোরো ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গেই ভূ-গর্ভস্থ পানি ও অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার কমিয়ে, কেবলমাত্র বৃষ্টির পানিকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প খরচে এ ধান উৎপাদন করা সম্ভব। স্বল্প মেয়াদী এ আউশ ধানের চাষ করা গেলে এই সময়ে দেশে পতিত হিসেবে পড়ে থাকা ৩৫ লাখ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত ১ কোটি মেট্রিক টন ধান উৎপাদন করা সম্ভব। যার আর্থিকমূল্য প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। যা কিনা দেশের মোট ধানের চাহিদার প্রায় অর্ধেক।
আগে দেশে স্বল্প মেয়াদী আউশ ধানের ভাল জাত ছিল না। বর্তমানে বিনা-৮, পারিজা, বিরি ধান ২৭, ৪৮, ৫৬, ৫৭, আই আর-৬৪, চেহেরাং সাব-২, সি আর ধান-৪০সহ বেশ কয়েকটি স্বল্পমেয়াদী ধানের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। এ জাতের ধানগুলো একদিকে যেমন খরা সহিষ্ণু; তেমনি অন্যান্য জাতের তুলনায় বড় হওয়ায় সহজে বন্যায় ডোবে না। এসব জাতের ধান একটানা দুই সপ্তাহ পানিতে ডুবে থাকলেও নষ্ট হয় না।
এছাড়া, এসব জাতের ধানে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে সেচের প্রয়োজন হয়না। সাধারণ জাতের ধান উঠতে সময় লাগে ১২০ থেকে ১৪০ দিন। সেখানে বৃষ্টির পানিতেই আউশ মৌসুমে ধান লাগিয়ে ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে কৃষক এ ধান ঘরে তুলতে পারবেন। এতে হেক্টরপ্রতি ৩ থেকে সাড়ে তিন টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া কৃষকরা নিজেরাই এ ধান বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করে আউশ চাষের মৌসুমে জমিতে লাগাতে পারবেন।
কৃপ্র/ এম ইসলাম