কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ শীতের শুরুতেই ‘টমেটোর রাজ্য’ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বাজারে উঠতে শুরু করেছে উন্নতজাতের শীতকালীন হাইব্রীড টমেটো। ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্বেও টমেটোর ভাল দাম না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা। বর্তমানে গোদাগাড়ীতে মণ প্রতি কাঁচা টমেটো এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, সারাদেশে উৎপাদিত মোট শীতকালীন টমেটোর তিন ভাগের দুই ভাগই উৎপাদন হয় গোদাগাড়ীতে। চলতি মৌসুমে এখানে দুই হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড জাতের শীতকালীন টমেটোর চাষ হয়েছে। গত বছর প্রায় দুই হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন টমেটোর চাষ হয়েছিল।
গোদাগাড়ী উপজেলার মহিশালবাড়ী গ্রামের টমেটো চাষি জিয়াউর রহমান (৪০) জানান, গত বছর এ সময় মণপ্রতি কাঁচা টমেটো এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। এ বছর মৌসুমের শুরুতেই মণপ্রতি কাঁচা টমেটো এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে আর কিছুদিন পর টমেটোর দাম আরও অর্ধেকে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলার কেশবপুর গ্রামের টমেটো চাষি আবদুল আওয়াল (৫০) বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করে তিনি তিন বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। শুক্রবার তার জমি থেকে প্রথম দফায় চার মণ টমেটো উঠেছে। প্রতি মণ টমেটো বিক্রি করেছেন এক হাজার টাকায়। কিন্তু প্রথম দিকেই টমেটোর দাম দেখে হতাশা হয়ে পড়েছি।
বেজোড়া গ্রামের টমেটো চাষি সৈবুর রহমান (৪৫) জানান, গাছে পাতা কোঁকড়ানো রোগের আক্রমণে জমিতে এবার উৎপাদন এমনিতেই কম হবে। এ অবস্থায় টমেটোর ভালো দাম না পেলে কৃষকরা নিশ্চিত ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
নাটোর থেকে গোদাগাড়ীতে টমেটো কিনতে আসা শাহ্জাহান আলী (৪৫) নামে এক পাইকারী ক্রেতা বলেন, এবারের মৌসুমটাই খারাপ। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে পাকা টমেটোর দাম কম। এ কারণে বেশি দামে কাঁচা টমেটো কিনলে সেগুলো পাকিয়ে লোকসানে পড়তে হবে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান জানান, প্রতিবছর টমেটোর মৌসুমের মাঝামাঝিতে দাম কমে। কিন্তু এবার শুরু থেকেই দাম কম। এ নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা থাকলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করেন তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারী ক্রেতা আসলে কয়েক দিনের মধ্যেই টমেটোর বাজারের অস্থিরতা কেটে যাবে বলে আশা করেন তিনি।
সুত্রঃ যুগান্তর / কৃপ্র/ এম ইসলাম