কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ কপি চাষ করে ভাগ্য বদলে ফেলেছেন বগুড়ার নারচী ইউনিয়নের বিলপাড়া গ্রামের শাহিদা বেগম। শীত মওসুমে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে ৩৬ হাজার পিচ ফুল ও বাঁধা কপির চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, এই কপি বিক্রি করে তার খরচ বাদে আয় হবে প্রায় ৩ লাখ টাকা। সারিয়াকান্দির চাষিরা এবার জমিতে অধিকহারে আগাম জাতের সবজি চাষ করেছেন। ফলন ও দাম ভালো থাকায় চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
ফুলবাড়ী নয়াপাড়া গ্রামটির চাষিরা বহু বছর আগে থেকে সবজি চাষ করায় এরই মধ্যে গ্রামটি সবজি গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এরসঙ্গে এবার পাল্লা দিয়ে নারচী ইউনিয়নের বিলপাড়া গ্রামেও ৩ বছর ধরে সবজি চাষ হচ্ছে আগের থেকে দ্বিগুণ। এই গ্রামের শাহিদা বেগম সবজি চাষ করে সুনাম কুড়িয়েছেন। এবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছেন। শাহিদা জমিতে প্রায় ৩৬ হাজার কপির চারা গাছ রোপণ করেছেন। উঁচু জমিতে চারা গাছের বয়স যখন ২৬ দিন তখন তিনি তা উত্তোলন করে নিয়ে এসে রোপণ করেছেন ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহে।
চারা রোপণের পর থেকে তিনি ৪ বার নিড়ানি দিয়েছেন, বৃষ্টির পানি জমে থাকার হাত থেকে রক্ষার জন্য সর্বদা জমিতে কড়া নজরদারিতে রেখেছেন। রোপণের পর থেকেই তিনি হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ওই সবজি জমিতে। শাহিদা বেগম জানান, তিনি কৃষি পরিবারের সন্তান। নারী হিসেবে বিয়ে হয়ে স্বামীর ঘরে আসার পর থেকে তিনি সরাসরি বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। অন্য ফসলের চেয়ে সবজি চাষে লাভ বেশি হওয়ায় তিনি ১২ বছর যাবৎ সবজি চাষ করছেন। এবার ওই পরিমাণ জমিতে ‘স্টার’ নামের আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করেছেন।
এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। কপিগুলো উত্তোলন, বাজারজাত করতে আরও প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে কিছু বাঁধাকপি ও ফুলকপি বাজারে বিক্রি করে ৩০ টাকা আয় করেছেন। আর বাকি বাঁধাকপি ও ফুলকপি থেকে তিনি প্রায় ৫ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন। তিনি আশা করছেন বাজারে সবজির চাহিদা ও দাম থাকায় ৫ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করবেন। তাহলে তার সব খরচ বাদে প্রায় ৩ লাখ টাকারও বেশি আয় হবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে তিনি বাজারজাত করতে পারবেন কপিগুলো।
তিনি জানান, ঢাকার কাওরান বাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাঁচা বাজারের পাইকাররা তার কাছে সবজি ক্রয় করার জন্য খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সারিয়াকান্দি পৌর এলাকার বিবাহ নিবন্ধক। এছাড়াও তিনি এবতেদায়ী মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। পরিবারের আয়ের উৎস বাড়াতে এই সবজি চাষ করে থাকেন। সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাহাদত জামান বলেন, বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিশ্রমী চাষিরা আগাম জাতের সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ায় চাষিরা ধানের পরিবর্তে সবজি চাষ করছেন বেশি। নারচী বিল পাড়া গ্রামের শাহিদা বেগম নিজে সবজি চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তিনি পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছলতা অর্জন করেছেন।
সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন / কৃপ্র/ এম ইসলাম