কৃষি প্রতিক্ষণ রিপোর্টঃ আশির দশকে,বাংলাদেশের বৈদেশিক অর্জনের অন্যতম মাধ্যম ছিল পাট। তখন পাটকে আমরা বলতাম সোনালী আঁশ। দেশের শিল্পকারখানা বলতে আমরা পাট মিলগুলোকেই চিনতাম। সভ্যতা পাটের বিকল্প আবিষ্কারে অনেকটাই এগিয়েছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় এসেছে পলিথিন।
বাজার সদাই, সকল কাজে অবলীলায় সবাই আমাদের ফ্রি পলিথিনের জোয়ার বইয়ে দিতে শুরু করলো। কিন্তু ব্যবহারের একপর্যায়ে আমরা অনুভব করলাম পলিথিনের আধুনিক ব্যহারের নামে আমরা যে উন্নতিতে এগোচ্ছি সেটা আসলে প্রাণ ও প্রকৃতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতিকর।
শত বছর মাটির নীচে অক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকবে এ সকল পলিথিন। রাজধানী ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা নদীতে ইতিমধ্যে ৮/৯ ফুট পলিথিনের আস্তরণ জমেছে । নদীগুলো মৃত্যুর দার প্রান্তে, গভীরতা কমে যাচ্ছে, পানিতে অসহনীয় দূষন। শুধু নদী নয়, একই অবস্থা আজ আমাদের ভূমির।
চারদিকে যে সকল পলিথিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সেখানে কোনো উদ্ভিদ জন্মাতে পারছে না। এ বিপর্যয় কি শুধুই বাংলাদেশে? না। উন্নত বিশ্ব বহু আগেই প্রাণপ্রকৃতির হুমকিদাতা সামগ্রীকে আগেই চিহ্নিত করেছে। শুধু পলিথিন নয়, যাবতীয় রাসায়নিক ব্যবহার করে প্রকৃতির প্রদত্ত সামগ্রীর বিকল্প সন্ধানে না যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে সকলকে সচেতন করে তুলতে।
বিশ্ব এখন জীব ও বৈচিত্র্য বান্ধব এবং প্রাকৃতিক সামগ্রীর দিকে এগোচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায়, উন্নত বিশ্বের আগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে পাট ও পাট জাতীয় সামগ্রী। বর্তমান বিশ্বের এই অভিজাত বাজারের দখল নিতে এগিয়ে এসেছে দেশ ভারত,পাকিস্তান, চীন, ভিয়েতনাম সহ আরো অনেকেই। কিন্তু বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের উন্নত পাট এখনও সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছে।
যদিও দেশের অধিকাংশ জুটমিল আজ বন্ধ। পাটের উত্পাদনের পরিমান ও যথেষ্ঠ কমেছে। তারপরওদ বাংলাদেশের পাট কাচামাল হিসেবে কিনে নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলো সেগুলোর মাধ্যমে আধুনিক জীবন যাপনের সামগ্রী তৈরি করে বাজারজাত করছে।
কেয়ার বাংলাদেশ দেশের ৪টি জেলার রংপুর, কুড়িগ্রাম, সাতক্ষরিা, যশোর কৃৃষক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও রাজধানীর ডিজাইনারদের সমন্বয়ে দেশের ঐতিহ্যবাহী এই প্রকৃতিক সম্পদটির পূনরুজ্জীবনের সহায়ক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। পাটের দিকে প্রত্যাবর্তন বা ‘সুইচ টু জুট’ নামের এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যে দেশের ও আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
আধুনিক বিশ্বের প্রাকৃতিক সামগ্রীর ব্যাবহার প্রবণতার সাথে সঙ্গতি রেখে প্রস্তত করছে মেয়েদের হ্যান্ডব্যাগ, স্কুলব্যাগ, ট্রাভেল ব্যাগ, কার্ড হোল্ডার, মানিব্যাগ, টিফিন ব্যাগ থেকে শুরু করে জুতা স্যান্ডেল পর্যন্ত।
কৃপ্র/ এম ইসলাম