কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আমাদের দেশে বিল-ঝিল, জলাশয় ও নিচু জমিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয় লাল শাপলা। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের জলাশয়ে লবণাক্ততার কারণে বিলুপ্তির পথে এ ফুলটি। জানা গেছে, ৯০ দশকের পর খুলনার কয়রাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোয় ব্যাপকভাবে লবণ পানিতে চিংড়ি চাষ শুরু হলে বিলুপ্ত হতে থাকে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ। কয়রা গ্রামের বিমল মণ্ডল জানান, দুদশক আগেও বর্ষাকাল থেকে শরত্কালের শেষ পর্যন্ত বিলের পর বিল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকত নয়নাভিরাম রক্ত শাপলা বা লাল শাপলা। কিন্তু লবণাক্ততার প্রভাবে এখন বিলুপ্তপ্রায় লাল শাপলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ। তাছাড়া জমিতে অধিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, খাল-বিল ও জলাশয় ভরাটের ফলে জেলার বিলাঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে লাল শাপলা।
উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম মিজান মাহমুদ বলেন, সাধারণত শাপলা তিন প্রকারের হয়। এর মধ্যে সাদা, বেগুনি (হুন্দি শাপলা) ও অন্যটি লাল রঙের। এর মধ্যে সাদা ফুলবিশিষ্ট শাপলা সবজি হিসেবে ও লাল রঙের শাপলা ঔষধি কাজে ব্যবহূত হয়।
তিনি বলেন, শাপলা খুব পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি সবজি। সাধারণ শাক-সবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। শাপলায় রয়েছে আলুর চেয়ে সাত গুণ বেশি ক্যালসিয়াম। তাছাড়া ডায়াবেটিস, বুক জ্বালা, লিভার, ইউরিনারি সমস্যার সমাধানসহ বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিত্সায় ব্যবহার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম শাপলা লতায় রয়েছে খনিজ পদার্থ ১ দশমিক ৩ গ্রাম, অ্যাশ ৮ দশমিক ৭ গ্রাম, খাদ্যপ্রাণ ১৪২ কিলোক্যালোরি, প্রোটিন ৩ দশমিক ১ গ্রাম, শর্করা ৩১ দশমিক ৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ০ দশমিক ৫২ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ০ দশমিক ৩২, ড্রাই মেটার ৮ দশমিক ৪, ক্রুড আমিষ ১৬ দশমিক ৮, ক্রুড ফ্যাট ২ দশমিক ৮, ক্রুড ফাইবার ৬২ দশমিক ৩, নাইট্রোজেন ৩৫ দশমিক ৪, সোডিয়াম ১ দশমিক ১৯ ও পটাসিয়াম ২ দশমিক ২৩ ভাগ।
কৃপ্র/ এম ইসলাম