কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ চাঁদপুরে প্রশাসনের কঠোর কড়াকড়ি থাকার পরও পদ্মা মেঘনায় অবাধে ব্যবহার হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। অসাধু জাল ব্যবসায়ীদের সাথে আতাঁত করে কারেন্ট জাল সহজেই পেয়ে যাচ্ছে জেলেরা। অবশ্য চাঁদপুর সুতা ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা বলছে জেলেরা মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে সুতা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, মাঝে মাঝেই পুরানবাজারের সুতা পট্টিতে অভিযান চালানো হয়। এ ব্যাপারে তারা তৎপর রয়েছে সব সময়।
২০০৫ সালে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে আদালত কারেন্ট জাল উৎপাদন বিক্রি ও ব্যবহার অবৈধ ঘোষণা করলেও চাঁদপুরে এর ব্যবহার হচ্ছে প্রকাশ্যে। পদ্মা ও মেঘনা নদীতে জেলেরা বেশির ভাগ নৌকাতেই কারেন্ট জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করছে। সুতার জালের চেয়ে কারেন্ট জালের দাম অনেক কম হওয়ায় এর ব্যবহারে আগ্রহী বেশি জেলেরা। অসাধু জাল ব্যবসায়ীদের সাথে গোপনে যোগাযোগ করে এসব জাল তারা খুব সহজেই পেয়ে যাচ্ছে। যদিও তারা কোনো ব্যবসায়ীর নাম বলতে রাজি হয়নি।
জেলে আলমাছ মাঝি, রফিক জামাদার, দিদার হোসেন জানান, এক পাউন্ড কারেন্ট জাল মাত্র ৮শ থেকে এক হাজার টাকায় পাওয়া যায়। অথচ সুতার জালের দাম এর দ্বিগুণ। এজন্যে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরি। চাঁদপুর শহরের পুরানবাজারে কারেন্ট জাল পাওয়া যায়। যদিও প্রকাশ্যে তা বিক্রি করে না। আমরা গেলে তারা অন্য কোথাও থেকে জাল বের করে এনে দেয়।
এদিকে জেলেদের এসব তথ্য ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন চাঁদপুর শহরের পুরানবাজারের সুতা ব্যবাসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ দেবনাথ। তিনি বলেন, চাঁদপুর শহর নয়, বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা কারেন্ট জাল নিয়ে এসে পুরানবাজারের কথা বলে। সুতা ব্যবসায়ীরা অস্বীকার করলেও জেলে ও মৎস্য বিভাগের কথার সত্যতা পাওয়া গেছে। একটি সূত্র জানায়, মুন্সিগঞ্জে বেশ কিছু কারেন্ট জাল তৈরির গোপন কারখানা রয়েছে। সেখান থেকেই এসব কারেন্ট জাল চাঁদপুরে চোরাই পথে আসছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সফিকুর রহমান জানান, কারেন্ট জাল শুধু নদীর জন্যে নয়, পরিবেশের জন্যও খুব ক্ষতিকর উপদান। এই কারেন্ট জাল প্রতিরোধে প্রশাসনের সহায়তায় পুরানবাজারের সুতা পট্টিতে মাঝে মাঝেই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এমনকি কয়েকজনকে সাজাও দেয়া হয়েছে। জালও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য বিভাগ তৎপর রয়েছে। তিনি আরও জানান, গত দুই বছরে মৎস্য বিভাগ চাঁদপুরের প্রায় দেড় হাজার জেলেকে সুতার জাল দিয়েছে। বেশির ভাগ জেলে সরকারি এ সহায়তা না পাওয়ায় কারেন্ট জাল ব্যবহারের হার কমছে না। বরং বাড়ছে। অপরদিকে গত দুই বছরে প্রায় প্রায় দুই কোটি মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
সুত্রঃ যুগান্তর / কৃপ্র/এম ইসলাম