কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ টানা ক’বছর ধান পাট আবাদে লোকসানের পর এবার সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে মেহেরপুরের কৃষকরা। এজন্য কৃষিনির্ভর মেহেরপুরের কৃষকদের সময় নেই দু’দণ্ড কারো সাথে কথা বলার। কারো হাতে কোদাল ও নিড়ানি। কারো হাতে বীজ। দলবেঁধে আলুর বীজ বপন করছে কোন কোন জমিতে।
কোন কোন কৃষককে একা জমিতে সবজির ক্ষেত পরিচর্যাও চোখে পড়ে। এভাবেই সবজির ক্ষেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেপুরের কৃষকরা। দম ফেলার সময় নেই এখন তাদের। সিংহভাগ কৃষকের ক্ষেতেই দিন কেটে যাচ্ছে। অনেকে আবার রাত জেগে জমিতে সেচ দিচ্ছে। এত কর্মযজ্ঞ কেবল বেঁচে থাকার তাগিদে। সামান্য বাড়তি আয়ের আশায়। ধান-পাট চাষে টানা কয়েক বছর লোকসান গুণে এবার তারা শীতের সবজিতেই ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন।
কৃষকের পরিশ্রম ফলও দিয়েছে। চারিদিকে সবজির সমারোহ। বাঁধাকপি, ফুলকপি, মূলা, করলা, লাল শাক, পালংশাক, শিম, টমেটো, বেগুন, লাউ, শসা, মিষ্টি কুমড়া, বরবটি, ডাটা, চিচিঙা, পটল, কাঁচা মরিচ গাছে ছেয়ে আছে মাঠের পর মাঠ। শীতকালীন এসব ফসলের অধিকাংশই কৃষক নিয়মিত বাজারজাত করছেন। দামও পাচ্ছেন বেশ ভাল। মেহেরপুরের বিভিন্ন জনপদ ঘুরে সবজি চাষি ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য জানা গেল।
জেলা সদরের সবচেয়ে বড় সবজি চাষি ডাবলু হোসেন একাই প্রতিবছর শতাধিক বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করেন। এবারও তিনি শীতের আগাম সবজি চাষ করছেন ৬০ বিঘা জমিতে। এসব সবজির মধ্যে আছে ফুলকপি, পাতা কপি, ওলকপি, মরিচসহ অন্যন্য সবজি। বর্তমানে ৩৫ বিঘা জমি আলু চাষের জন্য জমি তৈরি করছেন। ডাবলু, চান্দু, টিটো, আতিকুর, রফিকুল, জেদু, ফারুখ, মন্টু, মানিকসহ অনেক কৃষককের সাথে কথা হয়। এসব প্রন্তিক চাষিরা জানান, ধান-পাট চাষে টানা কয়েক বছরের লোকসান দেয়ার পর এবার তারা ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন। সবজি চাষে জমি ও পুঁজি, দুইই কম লাগে। এবার সবজির ফলনও ভালো হয়েছে। সবার মনেই নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় মোট ১৩ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শীতকালীন সবিজ চাষ করা হয়েছে। এই জেলার মাটি সবজি চাষের উপযোগী। এজন্য জেলার মানুষ ধান পাটের চেয়ে বিভিন্ন জাতের সবজি ফলিয়ে থাকেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ অঞ্চলের কৃষকরা ধান চাষে তেমন একটা সুবিধা করতে পারছেন না। তাই সিংহভাগ কৃষক এখন সবজি চাষকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। জেলার কৃষকরা সবজি চাষ করেই স্বাবলম্বী হচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন জেলার সবজি চাষিরা সবজি চাষ সম্পর্কে অভিজ্ঞ।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/ এম ইসলাম