কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী সংলগ্ন মেঘনার শাখা নদীতে ডাইং কারখানার তরল বর্জ্য মিশে যাচ্ছে। শাখা নদীর দুটি জায়গা দিয়ে এসব বর্জ্য মেঘনায় মিশে যাচ্ছে। জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের নরসিংদীর মাধবদী থেকে একটি খাল ১০ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের গোপালদী বাজারের পূর্ব পাশে মেঘনার শাখায় পড়েছে। শাখা নদীটি আড়াইহাজারের বিষনন্দী ও খাগকান্দা গ্রামের পাশ দিয়ে মূল মেঘনায় মিশেছে। সূত্র জানায়, শাখা নদীটি বিষনন্দী গ্রামের পাশ দিয়ে শুরু হয়ে গোপালদী, বারুয়াকান্দি, গাজীপুর, কড়ইতলা, শরীফপুর, রায়পুরা, মানিকপুর, চৈতনকান্দা, দয়াকান্দা, শম্ভুপুরা, নয়নাবাদ, শান্তিরবাজার, দাইরাদি, টোকসাদি, মুরাদপুর, রামচন্দ্রদী, খাসেরকান্দি গুহরদী, আগুয়ান্দি, উচিতপুরা, কাদিরদিয়া, বালাপুর ও জাঙ্গালিয়া গ্রামের পাশ দিয়ে মেঘনায় মিশেছে। একসময় শাখা নদীর দুই পাশের ৩০টি গ্রামের মানুষ গোসল, রান্নাবান্নাসহ কৃষিকাজে এর পানি ব্যবহার করত। তবে দূষণের কারণে এখন নদীর পানি কৃষিকাজেও ব্যবহার করা যায় না।খবর প্রথম আলো।
গোপালদী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের সীমানা দিয়ে প্রবাহিত খালের কালো পানি মেঘনার শাখায় পড়ছে। স্থানীয় লোকজন জানান, ৪০-৫০ ফুট প্রস্থের মাধবদী খাল দিয়ে সব সময়ই ডইং কারখানার তরল বর্জ্য মেঘনায় পড়ছে। এতে শাখা নদীর কোথাও কোনো মাছ নেই। শাখা নদীর দূষিত পানি বিষনন্দী ও খাগকান্দা দিয়ে মূল মেঘনায় প্রবাহিত হচ্ছে।
উলুকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. আকবর আলী বলেন, ১০-১২ বছর আগেও খালের দুই পাড়ের জমিতে বোরো চাষ হতো। কিন্তু ডাইং কারখানার বিষাক্ত পানির কারণে বোরো চাষ বন্ধ হয়ে গেছে। ওই পানি ব্যবহার তো দূরের কথা, হাত দিলেই চুলকায়।
নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা পরিষদের সভায় ইউএনও মহোদয় ডাইংয়ের কারখানার তরল বর্জ্যে নদীর পানি দূষণ হওয়ার কথা বলেছেন। তবে নরসিংদী অঞ্চলের ডাইং কারখানার বর্জ্যে মেঘনার পানি দূষিত হলেও আমাদের তেমন কিছুই করার নেই।’
নরসিংদী জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুছ ছালাম সরকার বলেন, ‘নরসিংদীর মাধবদী ও শেকেরচর এলাকায় ৫০টিরও বেশি ডাইং কারখানায় তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) রয়েছে। তবে কিছু কারখানা সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে ইটিপি ব্যবহার না করে দূষিত পানি ছাড়ছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।’
ইউএনও মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘আড়াইহাজারে মেঘনা নদীতে ডাইংয়ের তরল বর্জ্য মিশে নদীর পানি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। বিষয়টি জেলা পরিষদের সভায় আমি উত্থাপন করেছি। অন্য জেলার ডাইং কারখানার তরল বর্জ্যে মেঘনার দূষণ হচ্ছে আর তা মাত্রাতিরিক্ত।’
কৃপ্র/ এম ইসলাম