কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ হঠাৎ দেখলে মনে হতে পারে গোলাপ। আবার খাড়া পাতাসহ ডগা দূর থেকে অনেকটা টিউলিপের মতো দেখায়। রঙেরও ছড়াছড়ি। প্রায় ৪৫টি রঙের এ ফুলটি গাছ থেকে তোলার পর ১৫ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে। ফুলটির জাপানি নাম তরুকোগিকিও। আমাদের দেশে ইউস্টোমা নামেই বেশি পরিচিত। কেউ কেউ বলেন লিসিয়েন্থাস। বেশ কদর থাকলেও দাম চড়া।
দেশব্যাপী বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহের জন্য যশোরের গদখালীর ফুলের রাজ্যে এবার সংযুক্ত হলো ‘নন্দিনী’। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উদ্ভিদের অনুচারা উৎপাদনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রাজশাহীর এগ্রোব্যাক বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নতুন জাতের এই ‘নন্দিনী’ ফুল নিয়ে এসেছে। গদখালী এলাকার পানিসারা গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও নীলকন্দনগর গ্রামের সাইফুর ইসলাম ২৫০টি করে চারা প্রদর্শনী প্লটে রোপণের মাধ্যমে নতুন এই জাতের ফুল বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই ফুলের চাষ করে তারা ব্যাপক লাভবান হবেন। কেননা একটি চারা লাগানোর ৯০ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। তাছাড়া প্রতিটি চারা থেকে নুন্যতম পাঁচটি স্টিক পাওয়া যায়।
সম্প্রতি যশোরের গদখালীতে বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির কনফারেন্স রুমে এক অনুষ্ঠানে এগ্রোব্যাকের উদ্ভিদবিজ্ঞানী ও গবেষক মতিউর রহমান নন্দিনীর চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, নন্দিনীর ইংরেজি নাম ‘লিসিয়ানথাস’। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘এস্টোমা গ্রান্ডিফ্লোরাম’। গ্রান্ডিফোরাম জাপানি ভাষায় তরুকোগিকিও এবং আমেরিকায় ‘আমেরিকান গোলাপ’ নামে পরিচিত। জেনেটিনসিয়া পরিবারের অন্তর্ভুক্ত বর্ষজীবী গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ এটি। এটি মূলকান্ড এবং পাতায় বিভক্ত, পাতার রং নীলাভ সবুজ রঙের। গাছটি লম্বায় ২০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়।
এই ফুল ৪৫টি রঙে দেখা যায়। একটি গাছে কমপক্ষে ৮০ থেকে ১২০টি ফুল ফোটে। উৎপত্তিস্থল যুক্তরাষ্ট্রে হলেও এই ফুলের চাষ নিয়ে গবেষণা হয়েছে জাপানে। গত দশক থেকে জাপান, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, চীন, নেপাল, ভুটানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ফুলের জনপ্রিয়তা ও বাণিজ্যিক উৎপাদন দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে ফুলের জগতে অবস্থান সবার ওপরে। একক ও দ্বৈত রঙের ৮০টি অধিক ফুল দেখা যায়। সাধারণত এই ফুল গাছ থেকে তোলার পর প্রায় ২০ দিন এবং গাছে ফোটা অবস্থায় ৩৫ থেকে ৪০ দিন সতেজ থাকে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম