কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় চলতি মৌসুমে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চলছে খেজুর গুড় উৎপাদনে ব্যস্ততা। বাঘা উপজেলার খেজুর গুড়ের খ্যাতি দেশজুড়ে।এই শীত মৌসুমে খেজুরগুড় থেকে সরকারিভাবে সাড়ে ৪ কোটি টাকা আয় হবে। তবে বেসরকারি হিসেবে প্রায় ১২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। উপজেলায় দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে ৩০ হাজার ৩৮৯ কৃষি পরিবার রয়েছে। খেজুর বাগান রয়েছে চার হাজার। এছাড়া সড়কপথ, পতিত জমি ও বাড়ির আঙিনা মিলে দেড় লক্ষাধিক খেজুরগাছ আছে।
একজন গাছি প্রতিদিন ৫০ থেকে ৫৫টি খেজুর গাছের রস আহরণ করতে পারেন। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চার হাজার গাছি রস সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছে। প্রতি মৌসুমে তারা খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল হয়ে জীবিকানির্বাহ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একেকজন কৃষক তাদের গাছের সংখ্যা অনুপাতে গাছি নিয়োগ করেন। তারা মৌসুম জুড়ে রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত থাকেন।
উপজেলায় গুড়ের প্রধান হাট বাঘা ও আড়ানী হাট। এরপর রয়েছে মনিগ্রাম ও দিঘাসহ অন্যান্য হাট। সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার বাঘারহাট বসে। এ হাটেই সবচেয়ে বেশি গুড় বেচাকেনা হয়। উপজেলার বাঘা ও আড়ানী পৌরসভা ছাড়াও বাজুবাঘা, গড়গড়ি, পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, আড়ানী, বাউসা ও চকরাজাপুর ইউনিয়নের অন্যান্য হাটেও কম-বেশি গুড় বেচাকেনা হয়। তবে বেশি দাম পাওয়ার আশায় অনেকেই বাঘারহাটে গুড় বিক্রি করতে আসেন।
বাঘার হাটে রোববার প্রতি কেজি খেজুর গুড় ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। মৌসুমের একেবারে শুরুতে এ গুড়ের দাম প্রতি কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। প্রতি বছরই মৌসুমের শুরুতে বেশি দামে গুড় বিক্রি হলেও ভরা মৌসুমে দাম কিছুটা কমে যায়।
বাঘা বাজারের ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার এনামুল হক বলেন, চলতি শীত মৌসুমে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার গুড় বেচা কেনা হবে। ফলে উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা প্রায় ১২ কোটি টাকা আয় করবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা বেগম বলেন, সরকারি হিসেবে চলতি মৌসুমে মানুষ খেজুরগুড় থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা আয় হবে। উপজেলার ৩৫ হেক্টর জমিতে খেজুর গাছ রয়েছে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম