কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বরিশালের কৃষকরা মাল্টা চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। মাল্টা চাষ শুরুর দুই বছরের মধ্যে ভাল মানের ফল পাওয়ায় এ আশা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের মতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ অঞ্চলে মাল্টায় তেমন কোন রোগ-বালাই নেই। এ ছাড়া মাল্টা চাষাবাদের জন্য খরচও অনেক কম। পাশাপাশি মাল্টা গাছের সঙ্গে ভিয়েতনামী জাতের নারকেলের চারা রোপণ করার সুযোগ রয়েছে। যা থেকে বাড়তি আসতে পারে কৃষকের ঘরে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় শস্য বহুমুখীকরণ প্রকল্পের (এসসিডিপি) আওতায় ২০১৪ সালে জেলা সদর, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুরসহ পাঁচ উপজেলায় প্রথমে বারি মাল্টা-১ গাছের পরীক্ষামূলক চারা চাষ করা হয়। পরবর্তীতে ১০টি উপজেলায় প্রায় এক হাজার মাল্টা গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এসব মাল্টা গাছের মাঝে চলতি বছর থেকে ভিয়েতনাম উচ্চ ফলনশীল জাতের নারকেল গাছের চারা রোপণ করা হয়।
এ প্রকল্পের চাষী বাবুগঞ্জ উপজেলার খানপুরা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য রহিম সরদারের প্লটের গাছে চলতি বছর ব্যাপক ফল ধরেছে। তাঁর বাগানের একটি গাছেই ১৪৮টি মাল্টা ধরেছে। এখানে ৬০টির মতো গাছ রয়েছে। তিনি ২০১৪ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপজেলা অফিসের সহায়তায় স্থানীয় হর্টিকালচার সেন্টারের মাধ্যমে এসব চারা সংগ্রহ করে রোপণ করেছিলেন। রহিম সরদার জানান, এবার যে এতো বেশি পরিমাণ ফল হবে তা তিনি কল্পনাই করতে পারেননি। আর এগুলো আমদানি করা মাল্টার মতো পানসে নয়। খেতে খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু। তিনি আরও জানান, কৃষি অফিস থেকে গাছ নিয়ে তিনি পটাশিয়াম ও টিএসপি সার ব্যবহার করেছেন। তবে নিজ উদ্যোগে গোবরের মিশ্রণে তৈরি জৈব সার বেশি প্রয়োগ করেছেন। ফলে কোন রোগ-বালাই হয়নি। তেমন কোন খরচও হয়নি।
এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম বেগম বলেন, শুরুর দিকে মাল্টা চাষ নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এখন এ অঞ্চলে মাল্টা চাষের প্রসার ঘটানো খুবই সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, নিয়মিত প্রদর্শনীর মাধ্যমে মাল্টা চাষের জন্য চাষীদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ জন্য দুটি মাল্টা গাছের মধ্যে একটি করে ভিয়েতনামী নারকেল উপি-১ গাছের চারা রোপণ করা হচ্ছে। এ নারকেল গাছ ৫-৬ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়ে কয়েক বছরের মধ্যেই ফলন দিতে শুরু করে।
মাল্টা চাষ নিয়ে বরিশাল কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক রমেন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, মাল্টা চাষের শুরুতেই সফলতা পাওয়া গেছে। ফলে মাল্টা চাষের প্রসারের লক্ষ্যে কৃষি অফিস কাজ করে যাচ্ছে। অল্পদিনেই প্রতিটি উপজেলা থেকে মাল্টার বাণিজ্যিক ফলন পাওয়া যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সুত্রঃ জনকণ্ঠ / কৃপ্র/এম ইসলাম