কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পিরোজপুর জেলার ৭ উপজেলার ৫২টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌর এলাকার প্রায় ৭৩ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৬২ হাজার ৮৩ মে. টন রবি ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পিরোজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর আমন ধানের ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে ১১ হাজার ৫৭৪ হেক্টরে খেসারী ডালের চাষ করা হয়েছে। নিম্নচাপের কারণে অকাল বর্ষণ বা জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি না পেলে ১১ হাজার ৫৭৪ মে. টনের অধিক খেসারী ডালের উৎপাদন হবে,বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩৪৫ হেক্টরে আলু, ৫ হাজার ২৭০ হেক্টরে শাকসবজি, ৭০৭ হেক্টরে মরিচ, ১৮৫ হেক্টরে সরিষা, ৮৭০ হেক্টরে মুগডাল, ৩২০ হেক্টরে ভুট্টা, ৩৫০ হেক্টরে মিষ্টি আলু এবং বাদবাকি জমিতে গম, মুসুর ডাল, ছোলার ডাল, মটর ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, সূর্যমুখী, তিল, চিনা বাদাম, তরমুজ, ক্ষীরা, ফুট, মরমা, ফেলন চাষ শুরু হয়েছে।
পিরোজপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন তালুকদার বাসসকে জানান, বোরো উৎপাদন বৃদ্ধিতে ধান ক্ষেতে জৈব সার ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার, সঠিক বয়সের চারা সারিতে রোপণ, গুটি ইউরিয়া ব্যবহার, পোকা দমনে পাচিং এবং আলোর ফাঁদ ব্যবহার করার ব্যাপক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে চাষীদের। এর প্রভাব পড়ছে রবি শস্য চাষে। রবি শস্যের উৎপাদনও বাড়ছে।
চলতি রবি শস্য মৌসুমে রবি শস্য চাষে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে ৩৭ লাখ ৩৬ হাজার ৬৭৫ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত এ টাকা পিরোজপুর জেলার ৭ উপজেলার ৩ হাজার ৩৬০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক রবি শস্য চাষীর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
পিরোজপুর সদর উপজেলার ৩১৫ জন, জিয়ানগরে ২শ’ জন, কাউখালীতে ২২৫ জন, নেছারবাদে ২৫০ জন, নাজিরপুরে ১ হাজার ১শ’ জন , ভান্ডারিয়ায় ৪৯০ জন ও মঠবাড়িয়ায় ৭৮০ জন কৃষকের নামের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনা সহায়তা দেয়া হয়েছে। গম চাষে ৭৫০ জন কৃষককে ৭৫০ বিঘার জন্য বিঘা প্রতি ১ হাজার ২৭০ টাকা, ভুট্টা চাষে ১ হাজার ২শত’ কৃষককে ১ হাজার ২শ’ বিঘার জন্য বিঘা প্রতি ১ হাজার ১৯০ টাকা, খেসারী ডাল চাষে ৭৫০ বিঘার জন্য ৭৫০ জন কৃষকে বিঘা প্রতি ৭১১ টাকা, ফেলন চাষে ১৬০ বিঘার জন্য ১৬০ জন কৃষককে বিঘা প্রতি ৭৫০ টাকা এবং গ্রীষ্মকালীন মুগ ডাল চাষে ৫শ’ বিঘার জন্য ৫শ’ জন কৃষকের প্রত্যেককে ৬৬০ টাকা বীজ ও সার বিনামুল্যে প্রদান করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে পিরোজপুরের উপ-পরিচালক মোঃ আবুল হোসেন তালুকদার জানান, বিনামূল্যে সার ও বীজ প্রদানের পাশাপাশি চাষীদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করছে জেলার সকল পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সরকারের এই প্রণোদনা সহায়তার ফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা বরি শস্য চাষে আগ্রহী হবে।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম