কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বাংলাদেশে পোল্ট্রি খাদ্যের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচেছ। পোল্ট্রি উৎপাদনের মোট খরচের শতকরা ৬৫-৭০ ভাগ খরচ হয়ে থাকে খাবারের জন্য। এই কারণে পোল্ট্রি উৎপাদনে লাভ-লোকশান নির্ভর করে সুষম খাদ্য সরবরাহের উপর। পোল্ট্রি খাদ্যে যে সমস্ত উৎপাদন বেশী পরিমাণে ব্যবহার করা হয় তার অধিকাংশই বিদেশ হতে আমদানি করতে হয়। এতে খাবারের দাম অনেক বেশী পড়ে। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ পশুসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট, আমাদের দেশে যে উপকরণ পাওয়া যায় তার উপর ভিত্তি করে সাশ্রয় মূল্যে সুষম খাদ্য তৈরীর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে খামারীগন প্রতি কেজি খাদ্য তৈরীতে প্রায় ০.৫-১.৭৫ টাকা কমে সুষম খাদ্য তৈরী করতে পারেন এবং এতে পোল্ট্রি খাদ্য তৈরীতে যে ব্যয় হবে তা সাশ্রয় করা সম্ভব।
উপকারিতাঃ
১। সারা দেশে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারী খামারীরা সুলভ মূল্যে পোল্ট্রি খাদ্য তৈরী করতে পারবে।
২। মোরস্তমুরগির উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব হবে।
৩। ইপিল ইপিল, সরিষার খৈল ও নারিকেল খৈল ব্যবহার করলে প্রচলিত প্রাণীজ/উদ্ভিজ আমিষ জাতীয় খাদ্য সামগ্রীর
৪। উপর চাপ কমানো সম্ভব হবে।
৫। সুলভ মূল্যে ডিম ও মাংস উৎপাদন।
প্রয়োগ নির্দেশিকাঃ
বর্তমানে পোল্ট্রি খাদ্যে পরিমিত মাত্রায় সহজপ্রাপ্য, পুষ্টিকর অপ্রচলিত খাদ্য-সামগ্রীর ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সহজপ্রাপ্যতা, পুষ্টিমান, উদ্দেশ্যানুসারে এবং মোরস্তমুরগি বয়স বিবেচনায় রেখে নির্বাচিত অপ্রচলিত খাদ্য সামগ্রীর সমন্বয়ে সুষম খাদ্য তৈরী করতে হবে। ব্যবহারের পূর্বে অপ্রচলিত খাদ্য যেমন ইপিল-ইপিল পাতা রোদে শুকিয়ে স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে গুড়া করে এবং সরিষার খৈল, নারিকেল খৈল চূর্ন করে রেশনে মিশাতে হবে। এই সকল খাদ্য উপাদান রোদে শুকালে অথবা সিদ্ধ করলে উহার ক্ষতিকর বস্ত নষ্ট হয়ে যায়। ফলে খাদ্য সামগ্রীগুলো মোরস্তমুরগির স্বাস্থ্যের উপর কোন ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে না। ক্ষুদ্র বা মাঝারী খামারীগণ অতি সহজেই এই সকল প্রচলিত খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করে মোরস্তমুরগির সুষম খাদ্য তৈরী করতে পারে। বাংলাদেশের যে সকল এলাকায় ইপিল-ইপিল, নারিকেল খৈল ও সরিষার খৈল সহজলভ্য যে সমস্ত এলাকায় এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা যেতে পারে।
ছক-১: অপ্রচলিত খাদ্য সামগ্রীর পোল্ট্রি রেশনে সবোর্চচ প্রয়োগ ও পুষ্টির তালিকা
অপ্রচলিত খাদ্য সমূহ
|
সবের্বাচ প্রয়োগ মাত্রা (%)
|
প্রোটিন/আমিষ (%)
|
বিপাকীয়শক্তি (কিলোক্যালরি/কেজি)
|
ইপিল-ইপিল
|
৫
|
২১-২৪
|
–
|
সরিষার খৈল
|
১০
|
১৮-২৩
|
২৩৭৩
|
নারিকেল খৈল
|
১০
|
২৫-৩০
|
১২০০
|
উপরোক্ত অপ্রচলিত খাদ্য উপাদানগুলো অন্যান্য খাদ্য উপকরনের সাথে উলেখিত অনুপাতে মিশ্রিত করে সুষম খাবার প্রস্তত করা সম্ভব।
ব্যবহারে সতর্কতাঃ
ঋতু,আবহাওয়া এবং সংরক্ষণের সুযোস্তসুবিধা বিবেচনা করে সাত দিনের বেশী খাবার তৈরী করা ঠিক নয়। রেশন ব্যবহারের আগে অবশ্যই পাতা রোদে অথবা অন্য কোন উপায়ে শুকিয়ে ভালভাবে গুড়া করে নিতে হবে।
সুত্রঃ তথ্য আপা প্রকল্প / কৃপ্র/এম ইসলাম