কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ যেদিকে চোখ যায় স্বচ্ছ পানি আর সবুজের হাতছানি। এলোমেলো সারিতে সাজানো উঁচু-নিচু ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়। আঁকাবাঁকা পথ। কাপ্তাই লেক এসে মিশেছে এই বৈচিত্র্যে। প্রকৃতিপ্রেমীদের প্রতিনিয়তই কাছে টানছে আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক। এখানে ভোরবেলা সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে উড়ে বেড়ায় সাদা মেঘ। মেঘের আঁচলে ঢেকে থাকে পাহাড়। চোখে পড়ে পাহাড়ের ভাঁজে টুকরো মেঘের অবাধ ছুটে চলা। দেখলে মনে হয় শিল্পীর তুলিতে আঁকা চোখ জুড়ানো জীবন্ত ছবি।
এই স্থানে যাওয়া যায় খুব সহজে। রাঙামাটি শহর থেকে আসামবস্তি সড়ক দিয়ে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাপ্তাই উপজেলা। সিএনজিযোগে লাগে আধা ঘণ্টা থেকে পৌনে এক ঘণ্টা। রিজার্ভ করে গেলে ভাড়া পড়ে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। তা ছাড়া প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল ইত্যাদি দিয়েও যাওয়া যায় এ সড়কে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাঙামাটির আসামবস্তি আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিচিত্র জীবনধারা।
পাহাড়ি পথে জঙ্গলের কাঠ পিঠে করে হেঁটে চলেছে নারী। চোখে পড়ে জুমঘর। অনেকে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে জুম চাষে ব্যস্ত। রাস্তার দুই ধারে থেমে থেমে হ্রদ আর পাহাড়ের মিলনে তৈরি মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ ১০টি ভাষাভাষীর ১১টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। পাহাড়ি-বাঙালি অসাম্প্রদায়িক মহামিলনের ঐকতানের কেন্দ্রবিন্দু এই আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক। এখানে প্রতিটি জনগোষ্ঠীরই রয়েছে নিজস্ব আচার অনুষ্ঠান, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যপূর্ণ সামাজিকতা।
পাহাড়ের বুক চিরে প্রবহমান স্বচ্ছ জলধারা ও সবুজ প্রাণের ছোঁয়া এ জেলাকে করেছে বৈচিত্র্যপূর্ণ। তবে হ্রদ, পাহাড়, অপরূপ অরণ্য আর কোলাহলমুক্ত এই পার্বত্য জনপদ এখনো পর্যটন স্পট হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। এ ব্যাপারে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, পার্বত্য চুক্তির আলোকে পর্যটন বিভাগটিও জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরই মধ্যে জেলা পরিষদের উদ্যোগে ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় রাঙামাটির বিভিন্ন নতুন নতুন স্থানে পর্যটন স্পট গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামবস্তি-কাপ্তাই পর্যটন স্পট হিসেবে সম্ভাবনাময় একটি সড়ক। তাই এ সড়ককে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন / কৃপ্র/এম ইসলাম