কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ইংরেজি নববর্ষ এরপর রয়েছে ভালবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও স্বাধীনতা দিবস। এই ৪টি উপলক্ষকে সামনে রেখে ফুলের বাজার ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন যশোরের গদখালীর ফুলচাষিরা। একই সাথে বর্তমান মৌসুমে বিয়েসহ নানা অনুষ্ঠানে ফুলের চাহিদা বাড়ছে। পাশাপাশি চলতি মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে চেষ্টা তাদের।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারা ইউনিয়নসহ জেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে রজনীগন্ধা, গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিউলাস, জিপসি, রডস্টিক, কেলেনডোলা, চন্দ্র মল্লিকাসহ ১১ ধরণের ফুল। সারাবছর বাজারে ফুল সরবরাহ করলেও এখানকার চাষিদের মূল টার্গেট বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষ, ভালবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও বিজয় ও স্বাধীনতা দিবস। এসব দিবসে ফুল বিক্রি করেই মূলত সারা বছরের লাভ-লোকসানের হিসাব মেলান তারা। তাই সময় মত ফুল বাজারজাত করতে এখন গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুল চাষিরা।
পানিসারা গ্রামের হযরত আলী নামে একজন চাষি জানান, আগস্টে অতিবৃষ্টিতে তার দুই বিঘা গাঁদা ফুলের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর নতুন করে পরিচর্যা শুরু করেন ক্ষেতের। এখন গাছ ও ফুলের অবস্থা ভালো। ২১ ফেব্রুয়ারির বাজার ধরা মূল টার্গেট। ওইসময় দাম ভালো পেলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। গদখালী এলাকার সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রায় ৬ বিঘা জামিতে গোলাপ, গ্লাডিওলাস, গাঁদা ও রডস্টিক চাষ করেছেন। মূলত ৫টি দিবস ঘিরে তাদের মৌসুম। এ সময়টায় ফুল বাজারজাত করে সারাবছরের লাভ লোকসানের হিসাব করা হয়। সেই হিসেবে বাজার ধরতে পুরোপুরি প্রস্তুত তিনি।। আশা করছেন ফুলের ভালো দাম পাবেন এবং লাভ করতে পারবেন।
লিটন হোসেন নামে অপর এক চাষি বলেছেন, বিজয় দিবসে ভালো ব্যবসা হয়েছে। এসময় বেশি গাদা ও গোলাপ চলে।। তার ক্ষেতেও প্রচুর গাদা ও গোলাপ রয়েছে। আসন্ন ৪টি দিবসে কৃষকরা প্রায় ৫০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন গদখালী ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফ্লাওয়ারস্ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম। তিনি বলেছেন, গত বছর এ পাঁচ দিবসে গদখালীর ফুল চাষিরা প্রায় ৪৬ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছিলেন। এ বছরও তারা টার্গেট পূরণ করতে পারবেন।। কেননা ইতিমধ্যে বিজয় দিবসে ফুল বিক্রি আশানারূপ ছিল।
যশোর জেলা কৃষি অফিসের উপপরিচালক এমদাদ হোসেন জানান, জেলায় মোট ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় গদখালিতে। চাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম ভালো পেলে ফুলের আবাদ সামনের দিনে বাড়বে।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম