কৃষি প্রতিক্ষণ রিপোর্টঃ রাজশাহীর সুস্বাদু পানের কদর অনেক দিনের।উন্নত প্রযুক্তির চাষ হলে রাজশাহীর এক বিঘা জমির পানই বছরে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা বিক্রি হতে পারে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে চাষিদের পান গবেষণাগারের দাবির বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। প্রেক্ষিতে কান্ড পচা ও পাতা মরা রোগে চাষিদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
রাজশাহীর পান চাষিরা এখানে একটি পান গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের দাবি তুলেছেন। রাজশাহীর ২৪ থেকে ২৫ হাজারের অধিক পান বরজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত লাখ লাখ পান চাষির জীবন-জীবিকা ও ভবিষ্যতই পাল্টে দিতে পারে যথাযথ গবেষণায়। যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যসহ আর যেসব দেশে এখানকার পান রপ্তানি হচ্ছে তা যে আরো বাড়বে সে বিষয়েও কোন সন্দেহ নেই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের এগ্রোনমী অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনসন বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপক বলেন, বাস্তবতার নিরিখে দেখা যায় পানের পাতাই সোনা। সনাতন নিয়ম ছেড়ে আধুনিক ও গবেষণাভিত্তিক পান চাষ করে ১ বিঘা জমি থেকে বছরে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু পুরাতন পদ্ধতিতে পান চাষ করার কারণে চাষিদের ভাগ্যের ওপরে নির্ভর করে। কোন কোন সময় আবাদ ভাল হয়। আবার কখনো খারাপ। তাই অঞ্চলে পান গবেষণা কেন্দ্র একান্ত প্রয়োজন।
মিষ্টি সুস্বাদু পানের জন্য খ্যাত পবা, মোহনপুর ও বাগমারা উপজেলায় পানের বরজে দেখা দেয় গোড়া পচা, শিকড় পচা ও পাতা ঝরা রোগ। এই তিন রোগের কারণে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। ফলে লোকসান চাষিদের ভাবিয়ে তুলেছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে রাজশাহী জেলার পবা, মোহনপুর, বাগমারা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর ও চারঘাট এই ছয়টি উপজেলায় এবার ১ হাজার ৮২১ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে । পান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার ৯৫৪ মেট্রিক টন। বর্তমান বাজার মূল্যে যার গড় দাম প্রায় ৯০ থেকে ১০০ কোটি টাকা। এছাড়া রাজশাহীতে ২৫ হাজারের অধিক পান বরজ আছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, এ ব্যাপারে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। পানের রোগ-বালাই সম্পর্কে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, জীব মানেই পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে রোগ বালায়ও আক্রমন করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক যত্ন নিলে আশানুরুপ ফল পাবেন চাষিরা। গবেষণাগার স্থাপনের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।