কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ চলতি রবি মৌসুমে নাটোর সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে মটরশুঁটির আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। জানা গেছে, উপজেলার বাঙ্গাবাড়িয়া, বালিয়াডাঙ্গা, দত্তপাড়া, লালমনিপুর, ধরাইল, গোয়ালডাঙ্গা, হরিশপুর এলাকায় ৬৪০ হেক্টর জমিতে মটরশুঁটির আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি।
বাঙ্গাবাড়িয়ার মটরশুঁটিচাষী সুমন আহম্মেদ জানান, এ বছর ১০ কাঠা জমিতে মটরশুঁটি চাষ করেছেন তিনি। এতে বিঘাপ্রতি ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম। যে হারে গাছে ফল এসেছে, তাতে বাজার ভালো থাকলে বিঘাপ্রতি ২০ হাজার টাকার অধিক বিক্রি করা সম্ভব হবে।
সদর উপজেলার লালমনিপুর গ্রামের কৃষক আক্কেল আলী বলেন, ফলন ভালো ও বাজারে দাম থাকায় এলাকার অনেক চাষী ধান চাষের পরিবর্তে মটরশুঁটি চাষে ঝুঁকছেন। তিনি বলেন, এ মৌসুমে ধান চাষে বেশি সেচের দরকার হয়। তাই খরচও বেশি হয়। এজন্য কম খরচে মটরশুঁটি চাষ করেছি। এখন যে বাজার আছে, তা স্থিতিশীল থাকলে লাভবান হওয়ার আশা করছি।
লালমনিপুর গ্রামের আব্দুছ ছামাদ, আবুল হোসেন, মজনু মিয়া জানান, প্রতি বিঘা জমিতে মটরশুঁটি আবাদে হাল-চাষ, বীজ, সারসহ সাকল্যে খরচ হয় ৩ হাজার টাকা। প্রতি একর জমিতে অন্তত ১২ থেকে ১৪ মণ মটরশুঁটি উত্পাদন হয়। বর্তমান বাজারদরে প্রতি বিঘায় উত্পাদিত মটরশুঁটি ২২ থেকে ২৭ হাজার টাকা বিক্রি করা যাবে। তাতে প্রতি বিঘায় লাভ হবে ১৮ থেকে ২৩ হাজার টাকা।
কৃষকরা আরো জানান, ক্ষেতে মটরশুঁটি গাছের অবস্থা দেখে মনে হয়, এবার আমাদের ভাগ্যের অনেকটা পরিবর্তন হবে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১২০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে পাঁচ গুণ বেশি জমিতে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, মটরশুঁটি চাষে কম কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়, বোনার পরে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না বলে কৃষকরা দিন দিন মটরশুঁটি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। নাটোর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ড. সাইফুল ইসলাম জানান, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে কৃষক দিন দিন মটরশুঁটি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে নাটোরের উত্পাদিত এসব মটরশুঁটি চলে যায় ঢাকাসহ অন্য জেলায়। ফলে উত্পাদিত ফসল বিক্রি করতে কোনো বেগ পেতে হয় না কৃষকদের।
সুত্র; বনিক বার্তা / কৃপ্র/এম ইসলাম