কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার ২৮টি গ্রামে এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বোম্বাই মরিচ। এসব গ্রামের তিন হাজারের বেশি কৃষক এ মরিচ চাষ করছেন। এবার মরিচের ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছর উপজেলায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বোম্বাই মরিচ বিক্রি হতে পারে। জানা গেছে, স্বরূপকাঠিতে দীর্ঘদিন ধরে বোম্বাই মরিচ চাষ হয়ে আসছে। তবে বাণিজ্যিক আবাদ শুরু হয় মাত্র পাঁচ বছর আগে।
ফলন ভালো হওয়ায় অনেকেই এখন বোম্বাই মরিচ চাষ করছেন। উপজেলার আটঘর, কুড়িয়ানা, সোহাগদল ও সুটিয়াকাঠী ইউনিয়নে বোম্বাই মরিচ চাষ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে কুড়িয়ানা, স্বরূপকাঠি, মিয়ারহাট ও বানারীপাড়ায় বোম্বাই মরিচের হাট বসছে। ফলনভেদে পার্থক্য থাকলেও প্রতি শতক জমিতে ৬০-৭০ হাজার মরিচ উত্পাদন হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসব হাট থেকে মরিচ কিনে নিয়ে যান।
মাহমুদকাঠীর মুসলিমপাড়া এলাকার মরিচ বেপারি মো. মুনির মিয়া জানান, এখানকার বোম্বাই মরিচ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। সরেজমিন বংকুরা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষক ক্ষেতে বসেই বেপারিদের কাছে মরিচ বিক্রি করছেন। কুড়িয়ানার কৃষক আব্দুর রহমান জানান, কার্তিকের শেষে এবং অগ্রহায়ণের শুরুতে বোম্বাই মরিচের বীজ বপন করা হয়। অগ্রহায়ণের শেষে জমিতে চারা রোপণ করা হয়।
বোম্বাই মরিচ চাষ করে এ উপজেলার অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এদের একজন আদাবাড়ী গ্রামের রিপন হাওলাদার। তিনি আগে দিনমজুরের কাজ করতেন। পরে ঋণ নিয়ে বোম্বাই মরিচ চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই তার লাভ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। রিপন এখন ওই গ্রামের সচ্ছলদের অন্যতম একজন। এ বছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে বোম্বাই মরিচ চাষ করেছেন।
রিপন জানান, এক বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মরিচ চারা রোপণ করা যায়। গড়ে প্রতি বিঘা জমিতে ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ১৫ দিন পর পর মরিচ তুলে বাজারজাত করা হয়। পাইকারি বাজারে প্রতি হাজার মরিচ বিক্রি হয় ৩৫০-৪০০ টাকায়। স্বরূপকাঠির উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হরিপদ বিশ্বাস বলেন, এ অঞ্চলে এখন বাণিজ্যিকভাবে বোম্বাই মরিচ চাষ হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের রোগব্যাধি দমনসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, এ বছর উপজেলায় বোম্বাই মরিচের উত্পাদন নিয়ে জরিপ চলছে। চলতি মৌসুমে কমপক্ষে সাড়ে ৩ কোটি টাকার বোম্বাই মরিচ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।
সুত্র; বনিক বার্তা / কৃপ্র/এম ইসলাম