কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ভোলা জেলার ৭ উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উফশী ৪২ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমিতে, হাইব্রিড ১ হাজার ৫৪ ও স্থানীয় জাত ৩ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হবে। এসব জমিতে বোরো ধানের জন্য বীজতলা তৈরি করা হয়েছে মোট ৪ হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে বোরো আবাদ আরো বাড়বে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মৃত্তুঞ্জয় তালুকদার বলেন, গত কয়েকদিন যাবত এখানে বোরো আবাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলায় উফশী, হাইব্রিড ও স্থানীয় জাতের ধানের মধ্যে বেশ কয়েক ধরনের ধান আবাদ করা হয়। হাইব্রিডের মধ্যে এসিআই ও সোনার বাংলা। উফশীর ভেতর ব্রী-ধান-৪৭, ব্রী-ধান-২৮, ২৯, বিনা ধান-৮, ১০, ভজন, বনেশ্বর ও ইরাটম-২৪। এছাড়া স্থানীয় জাতের মধ্যে চৈতি ও বোরো ধানের জাত অন্যতম। ভোলায় সাধারণত উফশীর আবাদ বেশি করা হয়।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে বীজতলা তৈরি শুরু হয়। জানুয়ারির প্রথম থেকে চারা রোপণ শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চলে। চারা বপণের পর কয়েকটি স্তরে ধান গাছ বেড়ে উঠে। এগুলো হলো খুশি (ধানের শীষ) উৎপাদন স্তর, থোর অবস্থা, ফুল অবস্থা ও পূর্ণ চাল তৈরির স্তর অন্যতম। মূলত ৪ থেকে সাড়ে ৪ মাসের মধ্যে কৃষকরা ফলন ঘরে তুলতে শুরু করে।
তারা আরো জানান, চলতি বছর কৃষকদের আধুনিক বোরো ধানের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণের জন্য মোট ৩৬০টি প্রদর্শনির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কৃষকরা কৃষি চাষাবাদ সম্পর্কে ধারণা, পরিচয়, চারা রোপণ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগসহ বিভিন্ন বিষয় জানতে পারছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক সহায়তা দিচ্ছে কৃষকদের।
এদিকে এ বছর জেলায় মোট ১ লাখ ৭৭ হাজার ২২ মে.ট. চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। হাইব্রিডের মধ্যে ৫ হাজার ৮ মে.ট চাল, উফশীর ১ লাখ ৬৫ হাজার ২৭৪ ও স্থানীয় ৬ হাজার ৭৪০ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন করা হবে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। তাই জমি প্রস্তুত শেষে এখন বোরো ধান আবাদে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষকরা।
জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে দেখা যায় বোরো ধানের চারা রোপণে মগ্ন কৃষকরা। কেউ কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলছেন। কেউ চারা রোপন করছেন। আবার কেউ শেষ সময়ের বীজতলার যত্ন নিচ্ছেন। কৃষক আলী আসরাফ, আলী মাহমুদ ও আকরাম হোসেন বলেন, তারা প্রত্যেকে এবার ২ একর করে জমিতে বোরো ধানের চাষ করবেন। জমি প্রস্তত শেষে এখন চলছে চারা রোপণ।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম