কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ একই জমিতে মিশ্র ফসল চাষের মাধ্যমে ভাগ্যবদল হয়েছে সীতাকুণ্ড উপজেলার চার হাজার কৃষকের। একই জমিতে শিম, লাউ ও টমেটো এবং আখ চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। লোকসান সম্ভাবনা কম থাকায় গত কয়েক বছরে উপজেলার কৃষিজমিতে মিশ্র ফসলের চাষ কয়েকগুণ বেড়েছে। উপজেলার কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের চাষিদের একটি বিরাট অংশ এখন মিশ্র ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তারা তাদের জমিতে একই সঙ্গে দু-তিন ধরনের ফসল চাষ করে কম খরচে উপার্জন করছে অনেক বেশি। অধিক লাভের আশায় অভিনব পদ্ধতির এ চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে উপজেলার চাষিরা।
মুরাদপুর ইউনিয়নের গোপ্তাখালী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ জমিতে সারি সারি ফুলকপির পাশাপাশি লাগানো হয়েছে লাউগাছ। শুধু ফুলকপির সঙ্গে লাউ নয়_ এ গ্রামের অনেকে একই সঙ্গে মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, শিমসহ মোট তিন প্রকার ফসল একই সঙ্গে চাষ করেছেন। একইভাবে সৈয়দপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, পানিতে তলিয়ে থাকা বেশকিছু জমিতে পানির ওপর মাচা করে একই সঙ্গে করলা এবং লাউ চাষ করা হয়েছে।
সৈয়দপুর এলাকার কৃষক সোলেমান সর্দার জানান, জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। কিন্তু চাষিরা এবার তা হতে দেননি। তারা জমির উঁচু জায়গায় আলাদা মাটি দিয়ে সেখানে গাছ লাগিয়েছেন। পানিতে তলিয়ে থাকা বেশকিছু জমিতে পানির ওপর মাচা করে একই সঙ্গে করলা এবং লাউ চাষ করা হয়েছে। গোপ্তাখালী এলাকার তরুণ চাষি মো. এরশাদ, ২৫ শতক জমিতে তিনি টমেটো লাগিয়েছেন। আর এ জমির ফাঁকে ফাঁকে লাগিয়েছেন ৮৫টি লাউগাছ। তিনি বলেন, এক সময় এ এলাকায় কোনো মিশ্র ফসল চাষ হতো না। বিগত কয়েক বছরে মিশ্র ফসলচাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়ে এলাকার বেশির ভাগ চাষিই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ এলাকার শতাধিক চাষি মিশ্র ফসল চাষের মাধ্যমে তিন মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা উপার্জন করছেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত সাহা জানান, মিশ্র ফসল চাষে চাষিদের মধ্যে আগ্রহ আমরাও লক্ষ্য করেছি। বিগত কয়েক বছরে এ ধরনের মিশ্র ফসল চাষ বেড়েছে। এবার সীতাকুণ্ডে প্রায় ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে ১৬ হাজার ২০০ চাষি শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। এতে প্রায় চার হাজার কৃষক তাদের জমিতে মিশ্র ফসল চাষ করছেন।
সুত্রঃ বনিক বার্তা/ কৃপ্র/ এম ইসলাম